প্রতীক বরাদ্দের পর পটিয়া পৌরসভার পালে লাগলো নির্বাচনী হাওয়া

কারও পছন্দ চশমা। কারও জবাফুল। কেউ বা নিয়েছেন আনারস। আবার কারও ভাগ্যে জুটেছে গাজর, ডালিম, উটপাখি। পাঞ্জাবি নিয়েও লড়বেন কেউ। টেবিল ল্যাম্প, ব্ল্যাকবোর্ড পেয়েও নির্বাচনী লড়াইয়ে অংশ নিতে হবে কারও কারও।

বলছিলাম চট্টগ্রামের পটিয়া পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দের কথা। বুধবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই প্রতীক বরাদ্দ কার্যক্রম পরিচালিত হয়। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি এই পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

প্রতীক বরাদ্দ কার্যক্রমে অংশ নেন পৌরসভা নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং অফিসার মো. তারিফুজ্জামান, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আরাফাত আল হোসাইনী। তারা মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীদের হাতে প্রতীক তুলে দেন।

এদিনে পটিয়া পৌরসভায় আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মো. আইয়ুব বাবুলকে নৌকা প্রতীক দেওয়া হয়। বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নুরুল ইসলাম সওদাগর পেয়েছেন ধানের শীষ, জাতীয় পার্টি (এরশাদ) সামশুল আলম মাস্টার পেয়েছেন লাঙ্গল আর ইসলামী ফ্রন্ট প্রার্থী মো. আলী হোসাইন পেয়েছেন দলীয় মোমবাতি প্রতীক।

জানা গেছে, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিজেদের পছন্দের প্রতীক নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। আর যেসব প্রতীক একাধিক প্রার্থীরা দাবি করেছেন তাদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

এবার পটিয়া পৌরসভায় মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন চারজন প্রার্থী। এছাড়া ৯টি ওয়ার্ডে ৩৪ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও ৯ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

পটিয়া পৌরসভায় সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর-১ এর প্রার্থী হিসেবে বুলবুল আকতার পেয়েছেন চশমা প্রতীক, ফাতেমা বেগম জবাফুল ও শিরিন আকতার চৌধুরী পেয়েছেন আনারস প্রতীক।

সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর-২ এর প্রার্থী হিসেবে ইয়াছমিন আকতার চৌধুরী পেয়েছেন আনারস প্রতীক, জোৎস্না আরা বেগম চশমা ও জেসমিন আকতার জবাফুল পেয়েছেন প্রতীক।

এছাড়া সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর-৩ এর প্রার্থী হিসেবে চশমা প্রতীক পেয়েছেন ফেরদৌস বেগম, আনারস প্রতীক পেয়েছেন মোছাম্মৎ ফারহানা ইয়াছমিন। এছাড়া পারভিন আকতার অটোরিকশা প্রতীক নিয়ে লড়বেন নির্বাচনে।

এদিকে সাধারণ কাউন্সিলর পদে এক নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী হিসেবে আবদুল খালেক পেয়েছেন ডালিম প্রতীক, মোহাম্মদ নাছির উটপাখি ও জয়নাল আবেদীন পেয়েছেন পাঞ্জাবি প্রতীক।

দুই নম্বর ওয়ার্ডে পাঞ্জাবি প্রতীক পেয়েছেন শাহাদাত হোসেন। রুপক কুমার সেন পেয়েছে উটপাখি এবং সঞ্জীব কুমার দাশ পেয়েছেন টেবিল ল্যাম্প প্রতীক।

তিন নম্বর ওয়ার্ডে মুহাম্মদ আবু ছৈয়দ পেয়েছেন উটপাখি, আলমগীর পেয়েছে পাঞ্জাবী, সৈয়দ আবেদুজ্জামান আমেরী টেবিল ল্যাম্প ও গোলাম কাদের গাজর প্রতীক পেয়েছেন।

চার নম্বর ওয়ার্ডে গোফরান রানা পেয়েছেন পাঞ্জাবি, মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ব্ল্যাকবোর্ড ও এমএ আবছার পেয়েছেন উটপাখি প্রতীক।

পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডে মনোনয়ন ফরম জমাদানকারী নুরুল ইসলাম, সদ্য বিদায়ী কাউন্সিলর এম খোরশেদ গনী ও মুজিবুর রহমান মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। এ ওয়ার্ডের প্রার্থী জসিম উদ্দিনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়।

ছয় নম্বর ওয়ার্ডে লড়ছেন ছয় জন কাউন্সিলর প্রার্থী। তাদের মধ্যে আবুল কাশেম পাঞ্জাবি, আবুল মনছুর ডালিম, জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী গাজর, রুপশী দাশ উটপাখি, রুবেল দাশ ব্ল্যাকবোর্ড ও শফিউল আলম পেয়েছেন টেবিলল্যাম্প প্রতীক।

সাত নম্বর ওয়ার্ডের মো. নাজিম পেয়েছেন উটপাখি, কামরুল ইসলাম ডালিম, কামাল উদ্দিন টেবিল ল্যাম্প ও হাসান মুরাদ পাঞ্জাবি প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন।

আট নম্বর ওয়ার্ডের সদ্য বিদায়ী কাউন্সিলর আবদুল মান্নান পেয়েছেন ডালিম, ছরওয়ার কামাল মোছলেহ উদ্দিন রাজিব উটপাখি ও মোস্তাক আহমদ পাঞ্জাবি প্রতীকে লড়বেন নির্বাচনে।

নয় নম্বর ওয়ার্ডেও ছয় জন কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিবেন। এ ওয়ার্ডে সদ্য বিদায়ী কাউন্সিলর শেখ সাইফুল ইসলাম পেয়েছেন উটপাখি, ইলিয়াছ চৌধুরী ডালিম, মো. সোহেল ব্ল্যাকবোর্ড, আবদুল মাবুদ পাঞ্জাবি, এস এম খলিলুজ্জামান আমেরী ব্রীজ ও আহমদ নুর চৌধুরী টেবিল ল্যাম্প প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন।

চারজন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী নুরুল ইসলাম সওদাগর ছাড়া বাকি তিন জনের কেউ প্রতীক বরাদ্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না।

প্রসঙ্গত, আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারী পটিয়া পৌরসভা নির্বাচনে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। পৌরসভার মোট ভোটার সংখ্যা ৩৯ হাজার ৭৮৭। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ২০ হাজার ৯২৫ এবং মহিলা ভোটার সংখ্যা ১৮ হাজার ৮৬২।

এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!