টাকা মেরে কানাডায় পালানো চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীকে স্ত্রীসহ ধরতে পরোয়ানা

চট্টগ্রামের বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও ব্যাংকের অন্তত ৭০০ কোটি টাকা মেরে দিয়ে ২০১৩ সালের নভেম্বরে পরিবারসহ বিদেশে পালিয়ে যান চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী মোজাহের হোসেন। তিনি বর্তমানে কানাডায় বসবাস করছেন বলে জানা গেছে।

সেই মোজাহের হোসেন ও তার স্ত্রী জেবুন্নেচ্ছার বিরুদ্ধে ঋণখেলাপের এক মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত। সোমবার (১ নভেম্বর) প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড লালদীঘি শাখার ১০০ কোটি ১৫ লাখ ৪৭ হাজার ২৩০ টাকার ঋণখেলাপি মামলায় মেসার্স ইয়াছির এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড শাপলা ফ্লাওয়ার মিলসের মালিক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ওই পরোয়ানা জারি করেন চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান।

প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড লালদীঘি শাখা থেকে ১০০ কোটি ১৫ লাখ ৪৭ হাজার ২৩০ টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য চট্টগ্রামভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইয়াছির এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড শাপলা ফ্লাওয়ার মিলসের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছিল। আদালত ২০১৬ সালের ২১ জুলাই এ মামলায় রায় দেন। এরপর প্রাইম ব্যাংক ২০১৭ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর অর্থ জারির মামলা দায়ের করেন।

মোজাহের হোসেনের মালিকানাধীন ইয়াছির গ্রুপের কাছে প্রাইম ব্যাংক ছাড়াও ১০টি ব্যাংকের পাওনা প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা। এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে প্রাইম ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, এবি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক এবং ব্যাংক এশিয়া।

অন্যদিকে মোজাহের হোসেনের কাছ থেকে খাতুনগঞ্জের ২৯ জন ব্যবসায়ী পাবে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা।

এদিকে গত ২৯ সেপ্টেম্বর ১৩৩ কোটি টাকা আত্মসাতের এক মামলায় ইয়াসির এন্টারপ্রাইজের মালিক মোজাহের হোসেন এবং এবি ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ইনচার্জ (ক্রেডিট অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন মনিটরিং) মো. আমজাদ হোসেন ও এবি ব্যাংক চট্টগ্রাম নগরের হালিশহর পোর্ট কানেকটিং রোড শাখা ম্যানেজার মো. নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালে ডাল আমদানির জন্য ইয়াসির এন্টারপ্রাইজের মালিক মোজাহের এবি ব্যাংক হালিশহর পোর্ট কানেকটিং শাখায় ৮৪ কোটি টাকা ঋণ আবেদন করেন আগের পাওনা পরিশোধ না করেই। আগের ও পরেরটি মিলে ব্যাংকে দেনার পরিমাণ দাঁড়ায় ১৩৩ কোটি ১৮ লাখ ৯২ হাজার ৬১৭ টাকা।

এ ঘটনায় ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা ও ঋণগ্রহীতার দুর্নীতির সন্ধান পায় দুদক। পরবর্তীতে দুদক ২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি মামলা করে। দুই বছর পর মামলাটি তদন্ত শেষে তিন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক।

ইয়াছির গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ইয়াছির এন্টারপ্রাইজ, শাপলা ফ্লাওয়ার মিলস, ইয়াছির পলিমার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!