চবিতে দুই বছরেও শেষ হয়নি প্রথম বর্ষ, পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে আইইআর শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

দুই বছরেও প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা না হওয়ায় পরীক্ষা গ্রহণের দাবিতে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। পরে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর একটি স্মারকলিপির মাধ্যমে চার দফা দাবি জানান।

রোববার (৩ জানুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। পরে প্রক্টরের আশ্বাসে দুই দিনের জন্য তারা অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করে।

স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা লিখেছেন, ‘আমাদের প্রথম বর্ষের একটি কোর্স ছাড়া বাকি কোর্সের ক্লাস শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের জুলাই মাসে। ডিসেম্বরে পরীক্ষা নেওয়ার কথা থাকায় এক বছরের কোর্স আমরা ৬ মাসে শেষ করি।
কিন্তু ইনস্টিটিউট আর পরীক্ষা নেয়নি। আগের ব্যাচের রেজাল্ট বাকি আছে বলে পরীক্ষার সময় শুধু পেছাতে থাকে। সর্বশেষ গত বছর ২৫ মার্চ পরীক্ষার দিন ধার্য করে আমাদের রুটিন প্রদান করা হয়। কিন্তু ১৭ তারিখ থেকেই করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেলে পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায়।’

স্মারকলিপিতে লেখা হয়, ‘এরপর করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমরা গত ১৮ অক্টোবর স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রার বরাবর স্মারকলিপি প্রেরণ করি। সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় গত ১৫ নভেম্বর আটকে থাকা পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এরপর আমরা ইনস্টিটিউটের সাথে পরীক্ষার ব্যাপারে যোগাযোগ করলে ইন্সটিটিউট আমাদের জানায় ২০১৮-১৯ সেশনের পরীক্ষার ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। অথচ আমরা দেখতে পাই সংস্কৃত ডিপার্টমেন্ট গত ২২ ডিসেম্বর তাদের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থীদের ১ম বর্ষের পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।’

স্মারকলিপিতে আরও লেখা হয়, ‘যেহেতু আমাদের পরীক্ষার রুটিন, প্রশ্ন সব কিছু করা আছে সেহেতু এখন পরীক্ষা না নেওয়াকে আমরা ইনস্টিটিউটের অবহেলা হিসাবেই দেখি। ইতিমধ্যে প্রথম বর্ষে আমরা ২৪ মাস পার করেছি। এখনো যদি পরীক্ষা না নেওয়া হয় তাহলে আমরা দীর্ঘমেয়াদি জটে পড়বো। তাই এই অবস্থান কর্মসূচি থেকে আমরা বিনয়ের সাথে নিম্নলিখিত চারটি দাবি জানাচ্ছি।’

এই চারটি দাবি হল—
১. ১০ জানুয়ারির মধ্যে পরীক্ষার রুটিন দিতে হবে।
২. পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর পর প্রয়োজনে অনলাইনে দ্বিতীয় বর্ষের ক্লাস শুরু করতে হবে।
৩. পরীক্ষা শেষ হওয়ার তিন মাসের মধ্যে পরীক্ষার রেজাল্ট দিতে হবে।
৪. ইনস্টিটিউটের সেশনজট নিরসনে শিক্ষক নিয়োগ, ক্লাসরুম বাড়ানোসহ যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

এ বিষয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী আহমেদ জুনায়েদ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘দেয়ালে আমাদের পিঠ ঠেকে গেছে। দীর্ঘ ২৪ মাসেও আমরা প্রথম বর্ষ শেষ করতে পারিনি। এর আগে পরীক্ষার দাবিতে গত বছর ১৫ অক্টোবর আমরা রেজিস্ট্রার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করি। তখন পরীক্ষা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও আড়াই মাসেও পরীক্ষার কোন অগ্রগতি না থাকায় আজ অবস্থান কর্মসূচি দিতে বাধ্য হয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রশাসন আমাদের থেকে দুই দিন সময় নিয়েছে। তাই আমরা অবস্থান কর্মসূচি দুই দিনের জন্য স্থগিত করেছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূইয়া চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা দাবি নিয়ে এসেছিলো। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ইনস্টিটিউটের পরিচালকের সাথে কথা বলেছি। বিশ্ববিদ্যালয় বা ইউজিসি থেকে পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে কোন আপত্তি নেই। ইনস্টিটিউটের একাডেমিক কমিটির সভা করে পরীক্ষা নিয়ে নেবে।’

এমআইটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!