চট্টগ্রাম থেকে করোনার হটস্পটে যাচ্ছে ধান কাটার ১৫০০ শ্রমিক

দেশে করোনাভাইরাসের নতুন ‘হটস্পট’ কিশোরগঞ্জে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) ব্যবস্থাপনায় ধান কাটার শ্রমিক নিয়ে যাওয়া হচ্ছে চট্টগ্রাম থেকে। করোনার এমন হটস্পটে চট্টগ্রাম থেকে শ্রমিক নিয়ে যাওয়া নিয়ে শঙ্কাও তৈরি হয়েছে। কিশোরগঞ্জ থেকে ফেরার পর চট্টগ্রামের জন্য তারা বিপদ বয়ে আনবে কিনা তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।

গত ২৪ ঘণ্টায় কিশোরগঞ্জে নতুন করে শনাক্ত হয়েছে আটজন চিকিৎসকসহ ২৪ জন করোনা রোগী। এ পর্যন্ত কিশোরগঞ্জ জেলায় ১৯ চিকিৎসক ও পুলিশ সদস্যসহ ৭৬ জন শনাক্ত হয়েছেন। এই সংখ্যা চট্টগ্রামে শনাক্ত হওয়া করোনা রোগীর দ্বিগুণ। সরকারি হিসেবে চট্টগ্রামে বর্তমানে মোট করোনা পজিটিভ ৩৫ জন।

চট্টগ্রাম থেকে করোনার হটস্পটে যাচ্ছে ধান কাটার ১৫০০ শ্রমিক 1

জানা গেছে, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ৭০টি উপজেলাজুড়ে ৩৭৩টি বড় হাওরসহ ৫ শতাধিক হাওর রয়েছে। শুরু হয়েছে হাওরের বোরো ধান কাটার মৌসুম। ধানকাটার মৌসুমে সারা দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ওসব এলাকার মানুষ ঘরে ফিরে ধান কাটতে। কিন্তু এবার করোনা উদ্ভুত পরিস্থিতিতে গণপরিবহন সংকটে শ্রমিকরা হাওরে যেতে পারছে না। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সারা দেশের প্রশাসন ওই অঞ্চলের বাসিন্দাদের এলাকায় যাওয়ার ব্যবস্থা করেছে।

তেমনি চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) ব্যবস্থাপনায় হাওর অঞ্চলের বরো ধান কাটতে দেড় হাজার শ্রমিক যাচ্ছে। রোববার (১৯ এপ্রিল) ১০০ শ্রমিক নিয়ে ৫টি বাস রওনা হয়েছে। অন্যরা সোমবার রওনা দিবে। এজন্য দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী গ্রুপ এস আলম তাদের ৪০টি বাস দিয়ে সহায়তা করছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) নেজাম উদ্দিন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানা এলাকায় বগারবিল ও শান্তিনগর থেকে কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম থানার বাসিন্দা শ্রমিক শ্রেণীর লোকজন থেকে ১০০ জনকে নিয়ে ৫টি বাস হাওরের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম ছেড়েছে। বাকিরা আগামীকাল এস আলমের দেওয়া ৪০টি বাসযোগে গন্তব্যে যাবে। করোনা পরিস্থিতিতে তাদের যাতায়াতে যেমন নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা হচ্ছে, তেমনি হাওর এলাকায় স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ওখানে ধান কাটা ও বসবাসেও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা হয়েছে।

৯ এপ্রিল কৃষি মন্ত্রণালয় তাদের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে ধান কাটার শ্রমিকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাওরে আগমন ও চলাচল নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করেছে। ইতোমধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় ভাইরাস মোকাবেলা বিধি-নিষেধ অনুসরণ করে শ্রমিকদের ধান কাটতে পারার ব্যবস্থা করার ঘোষণাও দিয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, এই বছর হাওরে বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৭ লাখ ৪৫ হাজার মেট্রিক টন।

এফএম/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!