চট্টগ্রামের সাবেক সার্ভেয়ার স্ত্রীসহ দুদকের মামলার জালে

সম্পদ বিবরণীতে মিথ্যা তথ্য

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এক সার্ভেয়ার ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। স্বামীর অবৈধ সম্পদকে বৈধভাবে দেখাতেই নিজেকে ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দিতেন। আদতে তিনি ছিলেন একজন মৌসুমী ব্যবসায়ী।

রোববার (২১ জানুয়ারি) বিকালে দুদক জেলা সমন্বিত কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর উপসহকারী পরিচালক মো. খাইরুল ইসলাম ভূঁইয়া বাদি হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।

অভিযুক্তরা হলেন চট্টগ্রামের বাঁশখালী থানার পূর্ব চাম্বল গ্রামের জয়ন্ত কুমার দেব মহাজনের ছেলে ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সাবেক সার্ভেয়ার সুনীল কান্তি দেব মহাজন (৫৯) এবং তার স্ত্রীর নাম স্মৃতি রানী দেব (৫৫)। দু’জন চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী থানার জামালখান হেমসেন লেনের আনোয়ার মঞ্জিল ৩৩৮/৫০১ এ বসবাস থাকেন।

দু’জনের বিরুদ্ধে দুদকের দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ৫ লাখ ৩১ হাজার ৮২১ টাকার সম্পদের মিথ্যা তথ্য প্রদান ও জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে ৬০ লাখ ৯১ হাজার ৭৭১ টাকার সম্পদ অর্জন করে ভোগ দখলে রাখার প্রমাণ পেয়েছে দুদক। এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারা তৎসহ দন্ডবিধির ১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

দুদকের মামলার সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ২৮ জানুয়ারি সুনীল কান্তি দেব মহাজন ও তার স্ত্রীর স্মৃতি রানী দেবের বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ জারি করে দুদক। ২০২৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি তারা দুদক কার্যালয়ে সম্পদ বিবরণী পূরণ করে দাখিল করা হয়। সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে ৫ লাখ ৩১ হাজার ৮২১ টাকার সম্পদের তথ্য মিথ্যা তথ্য প্রদান করা হয়। যা দুদক আইন ২০০৪ এর ২৬ (২) অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

আরও জানা গেছে, তার স্ত্রী স্মৃতি রানী দেব ২০০৭-২০০৮ সাল থেকে নিয়মিত আয়কর দিয়ে আসছেন। তিনি তার সম্পদ বিবরণীতে তার নামে ৬৭ লাখ ৮৭ হাজার স্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য ঘোষণা দেন। ২০১১ সালের ৬ এপ্রিল কোতোয়ালী থানার রহমতগঞ্জ এলাকায় ৩ দশমিক ৭৫ শতক ভিটায় ২ তলা ভবনের উপরে একতলা টিনশেডের সেমিপাকা কিনেন স্মৃতি রানী দেব। দুদকের দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে নিজেই ব্যবসায়ী বলে দাবি করলেও অনুসন্ধানে তিনি একজন মূলত মৌসুমী ব্যবসায়ী বলে প্রমাণ পেয়েছে দুদক। প্রকৃতিপক্ষে তিনি একজন গৃহিণী। তার সকল ব্যয়সহ মোট অর্জিত সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ১৩ লাখ ১৩ হাজার ৮২১ টাকা। তার সম্পদের বিপরীতে বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ৫২ লাখ ২২ হাজার ৫২ টাকা। এক্ষেত্রে আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ পাওয়া যায় ৬০ লাখ ৯১ হাজার ৭৭১ টাকা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক জেলা সমন্বিত কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর উপপরিচালক মো. আতিকুল আলম।

এমএ/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!