চকরিয়ায় ফোনে ডেকে নিয়ে ব্যবসায়িকে কুপিয়ে হত্যা

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় এক ব্যবসায়িকে ফোনে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত মো. লতিফ উল্লাহ (৩৬) চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আধুনগর ইউনিয়নের সুফি মিয়াজী পাড়ার মৃত মোহাম্মদ ইলিয়াছ সওদাগরের ছেলে।

নিহত লতিফ ব্যবসায়িক সূত্রে দীর্ঘদিন ধরে তিনি কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরশহরে সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় সড়কে বসবাস করে আসছিলেন। ওখানে দোকান ঘর ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির এজেন্টের পাশাপাশি বিকাশের ব্যবসাও করতেন।

নিহত লতিফের ভাগিনা মো. মারুফুল ইসলাম জানান, প্রতিদিনের মতো সোমবার (৩ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে দোকান বন্ধ করে মামা আর আমি বাসায় চলে আসি। এদিন আনুমানিক রাত ১০ টার দিকে মামা বাসায় ভাত খাচ্ছিলেন। এসময় তার মোবাইলে একটি কল আসে।

এই কল পেয়েই মামা দ্রুত খাওয়া শেষ করে বাসা থেকে বের হয়ে দোকানে যান। ঘটনার পর পার্শ্ববর্তী দোকানদারের মাধ্যমে জানতে পারি মামাকে কুপিয়ে পালিয়েছে একদল দুর্বৃত্ত।

পরে তাকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তবে দুর্বৃত্তরা মামার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি নিয়ে যায়।

কান্না জড়িত কন্ঠে তিনি আরও বলেন, দোকানে টাকাও ছিলো। ওইসময় দুর্বৃত্তরা দোকানের ক্যাশবাক্স থেকে টাকা লুট করে পালিয়ে যায় বলেও তিনি জানান।

গতকাল মঙ্গলবার বাদে আছর নিজ এলাকার ছোট ও বড় মিয়াজী পাড়া জামে মসজিদের মাঠে লতিফের জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) বিকালে ব্যবসায়ী লতিফের লাশ নিজ বাড়িতে নিয়ে গেলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। এসময় তার আত্মীয় স্বজন, বন্ধু-বান্ধবরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। বাবাকে কফিনবন্দি দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন দুই মেয়ে লাবিবা ও রাকিকাত। তাদের আহাজারিতে চারপাশ শোকে ভারি হয়ে ওঠে।

চকরিয়া ওয়েস্টার্ন প্লাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আজিজুল হক বলেন, লতিফের সাথে কারো পূর্ব শত্রুতা ছিল না। কি কারণে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে বুঝে উঠতে পারছেন না কেউ। এ ধরনের হত্যাকাণ্ড কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না। আমরা দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার দাবি করছি।

চকরিয়ার ব্যবসায়ী সমিতির সিদ্ধান্তক্রমে ব্যবসায়ী লতিফ উল্লাহ হত্যার প্রতিবাদে বুধবার সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পৌরশহরে মানববন্ধন ও প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে, মঙ্গলবার দুপুরে ব্যবসায়ী মো. লতিফ উল্লাহ হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম। এসময় সাথে ছিলেন চকরিয়া-পেকুয়া সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার (এএসপি) তফিকুল আলম, চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গনিসহ পুলিশের কর্মকর্তারা।

এসময় কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.রফিকুল ইসলাম বলেন, হত্যাকাণ্ডের সাথে যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও কাজ করছে।

কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!