কালুরঘাট নতুন সেতু নির্মাণে এবার ‘পাকা কথা’ প্রধানমন্ত্রীর

কর্ণফুলী নদীর ওপর দিয়ে প্রস্তাবিত কালুরঘাট সড়ক কাম রেল সেতু নির্মাণে এবার ‘পাকা কথা’ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। খুব শিগগিরই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

রোববার (২৬ মে) গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চট্টগ্রাম ০৮ আসনের সংসদ সদস্য মইন উদ্দিন খান বাদল সাক্ষাৎ করতে গেলে এ কথা দেন তিনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় দুজন দুজনের শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নেওয়ার পাশাপাশি কিছু প্রয়োজন কিনা সাংসদ বাদলের কাছে জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। এসময় বাদল নিজের কিছু চাওয়া পাওয়ার নেই জানিয়ে জীবনের পড়ন্তবেলায় এসে বোয়ালখালীবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি কালুরঘাট নতুন সেতুটির নির্মাণ কাজ এ বছরের মধ্যে শুরু করার অনুরোধ জানান। প্রধানমন্ত্রী কালুরঘাট নতুন সেতু হবেই হবে জানিয়ে শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেবেন বলে সাংসদকে আশ্বস্ত করেন। নির্বাচনের আগে দেওয়া পূর্ব ঘোষণা মতে একবছরের মধ্যে সেতুর কাজ শুরু না হলে যে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন তাও প্রধানমন্ত্রীর কাছে পুর্নব্যক্ত করেন বাদল। তখন প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করতে হবে না বলেও আশ্বস্ত করেন।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম ৮ আসনের সংসদ সদস্য মইন উদ্দিন খান বাদল বলেন, ‘রোববার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে উনি আমার কাছে কিছু প্রয়োজন কিনা জানতে চান। তখন আমি একমাত্র চাওয়া কালুরঘাট সেতুর কাজ এ বছরের মধ্যেই শুরু করার অনুরোধ করি। উনি এতে সম্মতি দিয়েছেন। বলেছেন এ বছরের মধ্যেই কাজ শুরু হবে। খুব শিগগিরই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়ার কথাও বলেছেন।’

উল্লেখ্য, ব্রিটিশ আমলে নির্মিত কালুরঘাট রেল কাম সেতুটি জরাজীর্ণ হওয়ায় দুই দশকের বেশি সময় ধরে লাখ লাখ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে এবং বর্তমান সরকারের সদিচ্ছায় প্রস্তাবিত চীন, মিয়ানমার এবং ভারতের সঙ্গে রেল নেটওয়ার্ক স্থাপন এবং কর্ণফুলী নদীর ওপর পুরানো কালুরঘাট রেল সেতু ভেঙে নতুন করে রেল কাম সড়ক সেতু নির্মাণ করার উদ্যোগ নিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। এ সেতুটি সরকারের মেগা প্রকল্প দোহাজারী-ঘুমধুম রেললাইনের অন্তর্ভুক্ত।

বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল কর্তৃপক্ষ ২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর কালুরঘাট কর্ণফুলী নদীর ওপর রেল কাম সড়ক সেতু নামে একটি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (ডিপিপি) তৈরি করে ঢাকাস্থ রেলভবন কার্যালয়ে পাঠায়। পরে সেটি যাচাই-বাছাই শেষে কয়েক দফা পুনর্গঠন করে ২৭ মার্চ সংশোধিত ডিপিপি রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগে পাঠানো হয়।

প্রকল্প অনুসারে ২০২০ সালের শুরুতে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ১৬৪ কোটি ৯৮ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। যার মধ্যে ১ হাজার ১৪৬ কোটি টাকার দক্ষিণ কোরিয়ার ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ফান্ড (ইডিসিএফ)। বাকি টাকার যোগান দেবে বাংলাদেশ সরকার।

রেল কর্মকর্তাদের মতে, প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের যে প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন আছে, তার সুফলও নির্ভর করছে কালুরঘাটে নতুন সেতু নির্মাণের ওপর।

এডি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!