কাউন্সিলরের ‘ইশারা’য় দেওয়ানহাট ওভারব্রিজের নিচে এবার রাতের আঁধারে অবৈধ ঘর উঠছে

চট্টগ্রাম প্রতিদিনে সংবাদের পর দিনের বদলে কাজ চলছে রাতে

এবার মেয়র রেজাউলের নাম ভাঙিয়ে রাতে আঁধারে বিপুল গতিতে চলছে চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানহাট ওভারব্রিজের নিচে সিটি কর্পোরেশনের জায়গায় ‘অবৈধ’ স্থাপনা নির্মাণকাজ। আর এসব স্থাপনা নির্মাণের নেপথ্যে রয়েছেন ২৩ নম্বর পাঠানটুলী ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ জাবেদ ও তার দুই অনুসারী। আগে দিনের বেলায় নির্মাণকাজ চললেও এখন সময় পাল্টে কাজ চলছে রাতে।

কাউন্সিলরের ‘ইশারা’য় দেওয়ানহাট ওভারব্রিজের নিচে এবার রাতের আঁধারে অবৈধ ঘর উঠছে 1

অবৈধভাবে এই জায়গায় তড়িঘড়ি করে নির্মাণ করা হচ্ছে ৫০টি সেমিপাকা ঘর। এটি নিয়ে চট্টগ্রাম প্রতিদিনে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এরপর দিনের বদলে রাতের আঁধারেই শ্রমিক দিয়ে ঘরগুলো নির্মাণ করছেন কাউন্সিলর মোহাম্মদ জাবেদ এবং তার দুই অনুসারী জিয়াউল হক জিয়া ও সালাউদ্দিন।

এছাড়া প্রতিবেদনে সাংবাদিককে বক্তব্য দেওয়ায় আশপাশের বাসিন্দাদের ঘরে লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালিয়েছে তারা।

তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিবেদকের ওপর রেগে যান কাউন্সিলর জাবেদ। এই সময় তাকে ফোন না করতে প্রতিবেদককে ধমক দেন তিনি।

এর আগে ২০২২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর এই ওভারব্রিজের নিচে দীর্ঘদিন দখলে থাকা বস্তি উচ্ছেদ করেছিল চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। এই বস্তি ঘিরে মাদক ও নানা অপরাধের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছিল বলে অভিযোগ ওঠে। উচ্ছেদের পর চারপাশে কাঁটাতারের ঘেরাও দেওয়া হয় সেই সময়।

তবে তিন মাস না যেতেই এবার স্থানীয় কাউন্সিলর মোহাম্মদ জাবেদের অনুসারীরা জায়গাটি দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। প্রায় ৫০টি সেমিপাকা ঘর নির্মাণ করছে তারা।

বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে ঘর দেওয়ার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়েও নিয়েছেন ইতোমধ্যে— এমন অভিযোগও মিলেছে স্থানীয়দের কাছ থেকে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব রয়েছে কাউন্সিলর জাবেদ ও তার অনুসারীদের। কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ, তুচ্ছ বিষয়ে সংঘাত-সংঘর্ষে জড়িয়ে যাওয়া, টেম্পো স্ট্যান্ড ও হকারকেন্দ্রিক চাঁদাবাজি, মাদককারবারিদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ও দেন তারা। সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের সঙ্গে সখ্যতা থাকায় কাউকে তোয়াক্কা করেন না জিয়া ও সালাউদ্দিন। আর তাদের মাথার ওপরে ছায়া হয়ে আছেন কাউন্সিলর জাবেদ।

রাতে আঁধারে কেন চলছে নির্মাণকাজ—জানতে চাইলে ২৩ নম্বর পাঠানটুলী ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ জাবেদ প্রতিবেদকের ওপর রেগে যান। তিনি বলেন, ‘এই বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আপনি আমাকে এই বিষয় নিয়ে বার বার কল দিচ্ছেন কেন? আমি একজন কাউন্সিলর, আমি এখানে জড়িত আছি—আপনি এইভাবে বলতে পারেন না। আপনি থানায় যান, থানায় গিয়ে বলেন; কাউন্সিলর জড়িত আছে। কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন। এই বিষয়ে আমাকে আর কখনও কল দেবেন না।’

এই বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত মেয়র আব্দুস সবুর লিটন বলেন, ‘আমি এই বিষয়ে কিছুই জানি না, আমি ভারপ্রাপ্ত হিসেবে আছি। তবে নিয়ম অনুযায়ী, চাইলেই সিটি কর্পোরেশনের জায়গায় স্থাপনা নির্মাণ করতে পারে না। সে যদি আবেদন করেও থাকে তাহলে আবেদন অনুমোদনের পর অপেক্ষা করতে হবে, তারপর স্থাপনা নির্মাণ করতে পারবে; তার আগে নয়। ফ্লাইওভার ও ওভারব্রিজ—যাই হোক, এগুলো খুবই রিস্কি জায়গা; এখানে স্থাপনা করার প্রশ্নই আসে না।’

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!