কম দামেই গরু ছেড়ে দিচ্ছে হাটের ব্যাপারি

শেষ মুহূর্তে এসে জমলো চট্টগ্রামের পশুর হাট

কোরবানির ঈদ বাকি আর মাত্র একদিন। একদম শেষ মুহূর্তে এসে এই করোনা পরিস্থিতিতেই পুরোদমে জমে উঠেছে চট্টগ্রামের পশুর হাটগুলো। এবার হাটে ছোট ও মাঝারি সাইজের গরুর সংখ্যা বেশি। গত মঙ্গলবার থেকেই গরুভর্তি হাটগুলোতে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে বেচাকেনা। আজ শেষ দিনে এই সময় আরও বাড়বে। তবে হাটে ক্রেতাদের সমাগম থাকলেও গরুর দাম বাড়ছে না বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

এদিকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবার কোরবানির হাট দেওয়ার কথা থাকলেও পশুরহাটে স্বাস্থ্যবিধিতেও শিথিলতা এসেছে। এতে সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রামের বন্দর ও পতেঙ্গা পশুরহাট ঘুরে দেখা যায়, কোরবানির হাটে চাহিদার তুলনায় গরু সরবরাহ এবার বেশিই। হাটে ছোট ও মাঝারি গরুর সংখ্যা বেশি। বড় গরুও রয়েছে। তবে ক্রেতাদের বেশিরভাগের চাহিদার তালিকায় রয়েছে ছোট ও মাঝারি গরু। তিনটি হাটেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় অনীহা লক্ষ্য করা গেছে।

কম দামেই গরু ছেড়ে দিচ্ছে হাটের ব্যাপারি 1

কুষ্টিয়া থেকে ৪২টি গরু নিয়ে সল্টগোলা ক্রসিং পশুরহাটে বিক্রি করতে এনেছেন বাবুল ব্যাপারি। তার বেশিরভাগ গরু ছিল মাঝারি আকারের। দাম ৪০-৬০ হাজারের মধ্যে। তিনি বলেন, ‘গত দুই দিনে প্রায় ৩৫টি গরু বিক্রি হয়েছে। খুব সামান্য লাভে সেগুলো বিক্রি করেছি। গ্রাম বন্যার পানিতে ছেয়ে গেছে। তাই এখান থেকে অবিক্রিত গরুগুলো আবার সেখানে নেওয়া সম্ভব না। তাই লাভ যা হয় তার ওপর সন্তুষ্ট থেকে গরু বিক্রি করছি।’

ফরিদপুর থেকে ২২টি গরু এনে কলম মহাজনহাটে বিক্রি করছেন মন্ডল বেপারি। তিনি বলেন, ‘গত ৩-৪ দিন ধরে হাট ক্রেতাশূন্য থাকায় মাত্র পাঁচটি গরু বিক্রি হয়েছে। বুধবার একদিনে বিক্রি হয়েছে ১০টি গরু। গত বছরের চেয়ে এবার গরুর দাম খুবই কম। তাই সামান্য লাভে বিক্রি করছি।’

টাঙ্গাইল থেকে ১২টি গুরু নিয়ে বাটারফ্লাই পার্কে বিক্রি করছেন শাহজাহান। তিনি বললেন, ‘হাটে গরুর সরবরাহ অনুয়ায়ী ক্রেতা কম। তবে মঙ্গল-বুধবার থেকে বিক্রি একটু বেড়েছে। আমার আটটি গরু বিক্রি হয়েছে। আশাকরি আজকের ভেতরে সবগুলো বিক্রি করতে পারব। কম লাভে বিক্রি করেছি এসব।’

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কমল মহাজনহাট প্রকাশ কইল্লারহাটের ইজারাদার মমতাজ উদ্দিন বলেন, ‘গরুর হাটে গরু সরবরাহের সঙ্গে বেড়েছে গরু বিক্রিও। আমার হাটে যে পরিমাণ গরু আসার কথা ছিল তার চেয়ে অনেক কম এসেছে। আমার গরুর গাড়ি এলে পাশের আরেক ইজারাদারের লোকজন প্রভাব খাটিয়ে সেগুলো তাদের হাটে নিয়ে যায়। হাট নিয়ে লাভ তো দূরের কথা, উল্টো ইজারার ১ কোটি ২০ লাখ টাকা তুলতে পারা নিয়ে চিন্তিত।’

সল্টগোলা ক্রসিং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ইজারাদার জুয়েল বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে কোরবানির পশুর বাজার। চট্টগ্রামের অন্য হাটের তুলনার বেশি গরু সরবরাহ হয় সল্টগোলা বাজারে। ক্রেতাদের চাহিদা পূরণ করতে পারছে এ বাজার। গভীর রাত পর্যন্ত বেচাকেনা চলে। শেষ সময়ে এসে ক্রেতাদের সমাগম বেড়েছে। ছোট, মাঝারি ও বড় গরুর দামও হাতের নাগালে। এতে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই খুশি।’

মুআ/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!