কথাকাটাকটির জেরে খুন হয়েছিলেন ইপিজেডের হকার মাহফুজ

আদালতে ৩ অভিযুক্তের স্বীকারোক্তিমূলক জবাবন্দি

কেবল কথাকাটাকাটির জের ধরে ইপিজেড এলাকার হকার মাহফুজকে হত্যা করা হয়েছিল। পরিকল্পিত এ হত্যাকাণ্ডের এই মোটিভ উদঘাটন করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটল পুলিশ ( সিএমপি) বন্দর। প্রযুক্তির সহায়তায় মাহফুজ হত্যাকাণ্ডে জড়িত তিন অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেপ্তার করার পর শনিবার (২৩ মে) তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের একটি আদালতে গ্রেপ্তারকৃত ৩জন ১৬৪ ধারায় খুনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন বন্দর থানার ফেলা গাজির বাড়ির মো. বেলালের ছেলে হৃদয় (২৬), কক্সবাজার জেলার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের মহুরি পাড়ার আবুল কালামের পুত্র মো ইয়াসিন (২০) ও মো সজিব (৩২)।

জানা যায়, গত ২৯ এপ্রিল মো. হৃদয় ফ্রিপোর্ট মোড়ে হকার মাহাফুজের দোকানে কাপড় কেনার জন্য যান। কাপড় কেনাকে কেন্দ্র করে মো.হৃদয়ের সাথে মাহফুজের বাকবিতণ্ডা ও তর্কাতর্কি হয়। মাহাফুজ মো. হৃদয়কে অপমান করলে হৃদয় এ বিষয়টি মো. সজীবকে জানায়। তারা দুজনে মিলে অপমানের প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় ঝনক প্লাজার সামনে দুজনে মো . ইয়াসিনের সাথে বিষয়টি নিয়ে পরামর্শ করেন। তারা পরিকল্পনা করে এ অপমানের শোধ নেওয়া হবে মাহফুজকে হত্যা করে। এর পরদিন ৩০ এপ্রিল ইফতারের পর আসামি মো. সজিব ও হৃদয় মাহাফুজের দোকানে গিয়ে মাহাফুজের অবস্থান পর্যবেক্ষণ করেন। ১ মে ইফতারের পর থেকে আসামিরা মাহফুজের গতি পর্যবেক্ষণ করতে থাকে। ওইদিনই রাত অনুমানিক ১টার সময় মো. সজিব, মো. হৃদয় ও মো. ইয়াছিন মাহফুজের দোকানের সামনে আসে। মো. সজিব বাড়ি থেকে শপিং ব্যাগে করে নাইলনের রশি, কাপড়ের রশি, সুতার রশি ও একটি কালো স্কচ টেপ নিয়ে আসে। তিনজনে মিলে মাহফুজের দোকানের পেছনে ঢুকে প্রথমে সজিব মাহাফুজকে লাথি দিয়ে ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলে। তারপর মো.সজিব মো. হৃদয় মাহাফুজের গলা চেপে ধরে। মো. ইয়াছিন হাত-পা চেপে ধরে। মাহফুজ চিৎকার করতে চাইলে সজিব মাহাফুজের মুখে একটি রুমাল ঢুকিয়ে স্কচ টেপ লাগিয়ে দেয় । অনেকক্ষণ ধস্তাধস্তির পর মাহাফুজের মৃত্যু নিশ্চিত করে তারা। পরে লাশের গলায় ফাঁস লাগিয়ে দোকানের কলাপসিবল গেটের উপরে ঝুলিয়ে দেয়।

শনিবার (২ মে) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে পূবালী ব্যাংকের সামনে একটি বিল্ডিংয়ের সিঁড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় মাহাফুজুর রহমানের (২৪) মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত মাহফুজ পেশায় হকার। তিনি নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি থানার কমলপাড়া এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে।

উল্লেখ্য, ১৬ মে হত্যাকাণ্ডের সহযোগী কলসি দীঘির পাড়ের হোটেল আয়াতের প্লেট বয় মো. ইয়াসিনকে গ্রেপ্তার করে। পরে ইয়াসিনের স্বীকারোক্তিতে ১৭ মে হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা মো হৃদয়কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা জানায় মাহফুজের মৌখিক অপমানের প্রতিশোধ নিতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তারা।

সিএম/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!