এখনও ২৯০ কিমি দূরে আম্ফান, উপকূলে আঘাত হানবে সন্ধ্যায়

আম্ফানের প্রভাবে চট্টগ্রামের আকাশে বৃষ্টি

সুপার সাইক্লোনে পরিণহ হওয়া ঘূর্ণিঝড় আম্ফান উপকূলের কাছাকাছি আসলেও এখনও দূর্বল হয়ে পড়েনি। এটি সুপার সাইক্লোন রূপেই উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। বর্তমানে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের বাতাসের গতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২০০ থেকে ২২০ কিলোমিটার। মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে মাত্র ২৯০ কিলোমিটার দূরে আছে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। বুধবার (২০ মে) বিকেল বা সন্ধ্যার মধ্যে সুন্দরবনের কাছ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রমের সম্ভাবনা রয়েছে এটির।

এদিকে, সুপার সাইক্লোন ‘আম্ফানের’ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে চট্টগ্রামের আকাশে। বাতাসের গতিবেগ তেমন না হলেও কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি আকারের গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তবে সুপার সাইক্লোন ‘আম্ফান’ কেন্দ্রের ৮৫ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার। যা দমকা অথবা ঝড়োহাওয়ার আকারে ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুপার সাইক্লোন কেন্দ্রের নিকটে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

বুধবার (২০ মে) আবহাওয়ার এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সুপার সাইক্লোনটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ২০ মে বিকাল বা সন্ধ্যার মধ্যে সুন্দরবনের নিকট দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

এদিকে, পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুপার সাইক্লোন ‘আম্ফান’ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে একই এলাকায় অবস্থান করছে। দুপুর ১২টায় ২০ মে আম্ফান চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩২০ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে।

আম্ফান উপকূল অতিক্রমকালে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিসহ ঘণ্টায় ১৪০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ সময় উপকূলবর্তী এলাকার নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১০ থেকে ১৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। এ জন্য মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহা বিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহা বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া পূর্বাভাস কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ চৌধুরী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘বাংলাদেশে আম্ফানের প্রভাব শুরু হয়েছে। তবে চট্টগ্রামে এখনও তেমন প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। আগে ভারতের কলকাতা, দিঘা হয়ে আঘাত হানার পর সন্ধ্যা নাগাদ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আম্ফানের পুরো হিট হবে কলকাতার দিঘার পর খুলনার দিকে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে আঘাত হানার পর যদি ঘূর্ণিঝড়টি জোয়ারের সময় হয় তাহলে বাংলাদেশের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কয়েক গুণ বেশি বেড়ে যাবে। ভাটার সময় হলে ঝুঁকি কম থাকে কিন্তু জোয়ারের সময় হলে ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।’

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিসত্ত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

এসআর/এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!