আমবাগানে সেলুন দোকানিকে কোপানোর ঘটনায় ৭ কিশোর আটক

আমবাগানে শনিবারের মারামারির ঘটনায় রবিবার পুনরায় সেলুন দোকানিকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় ৭ কিশোরকে আটক করেছে খুলশী থানা পুলিশ। রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৫টার দিকে এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রণব চৌধুরী।

স্থানীয়রা বলেন, আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টায় দুই গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে। আটক কিশোররা সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল আলম লিমনের অনুসারী।

শনিবারের ঘটনার জেরে অন্যপক্ষের লোকজন গিয়ে সেলুন দোকানের মালিক সেলিমকে কুপিয়ে আহত করে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আহত মো. সেলিমকে (৩০) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। তবে সেলিম আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. জহিরুল ইসলাম।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাতে আমবাগানে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সাইফুল আলম লিমন ও পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ হোসেন হিরণের অনুসারীদের মধ্যে মারামারি হয়। এরপর থেকে আমবাগান এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। রোববার বিকেলে লিমনের অনুসারীরা টাইগারপাস জামতলা এলাকা থেকে সংঘবদ্ধ হয়ে আমবাগানে গিয়ে দোকানপাটে হামলা চালায়।

মারামারির ঘটনায় আহত অবস্থায় দুজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. জহিরুল ইসলাম।

ওসি প্রণব চৌধুরী বলেন, ‘গতকাল রাতে আমবাগানে স্থানীয় দুপক্ষে মারামারি হয়েছিল। এর জের ধরে একপক্ষের কয়েকজন কিশোর-তরুণ গিয়ে সেলুন দোকানের মালিক সেলিমকে কুপিয়ে আহত করে। তারা মাথায় জখম হয়েছে। আমরা ঘটনাস্থল থেকে সাত জনকে আটক করেছি। তারা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য।’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত ৯টার দিকে আওয়ামী লীগ নেতা হিরণের অনুসারী নজরুল গ্রুপের একজনকে মারধর করে লিমন গ্রুপের নেতা-কর্মীরা। এর মধ্যে একটি পক্ষ রেলওয়ে কলোনির পূবালী মাঠ হিন্দু পাড়া এবং অপর গ্রুপটি নালা পাড়ার বাসিন্দা। একজনকে মারধরের ঘটনা থেকেই এই দুই গ্রুপের মাঝে সংঘর্ষের সূত্রপাত। দুই পক্ষই দা-ছুরি নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। এ সময় কলোনিতে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। চারপাশে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। দুই গ্রুপের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ার কারণ হিসেবে কয়েকদিন আগে পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ডাকাত বেলাল নিহতের ঘটনাটিও কাজ করেছে বলে স্থানীয় বরাতে জানা গেছে।

উল্রেখ্য,২০১৩ সালে রেলওয়ের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে দুজন নিহতের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার আসামি সাইফুল আলম লিমন। সে সময় তাকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী লিমন নগরীর সিআরবি, টাইগারপাস, আমবাগান, কদমতলী এলাকায় বেশকিছু কিশোর-তরুণ-যুবক নিয়ে রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছে।

অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ নেতা হিরণ একসময় চট্টগ্রামের সংসদ সদস্য ডা. আফছারুল আমীনের অনুসারী ছিলেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে প্রভাবশালী এই কাউন্সিলরের সঙ্গে সংসদ সদস্যদের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে।

এইচটি/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!