চট্টগ্রামের পটিয়ায় গৃহবধূ জুবায়ের মোস্তফা চুমকি হত্যা মামলার তদন্তভার গেল পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) হাতে। সিআইডির তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে বাদির নারাজির কারণে অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২১ অক্টোবর) মামলার বাদি চুমকির পিতা গোলাম মোস্তাফা সিআইডির তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজী দিলে তা শুনানি শেষে পটিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক বিশ্বেশ্বর সিংহ এই নির্দেশ দেন।
নিহত জুবাইয়ের মোস্তফা চুমকি চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর ধোরলা গ্রামের আকবর সিকদার বাড়ির গোলাম মোস্তফা মেম্বারের একমাত্র কন্যা ও পটিয়ার কুসুমপুরা বিনিনিহারা গ্রামের খোরশেদ আলমের স্ত্রী।
জানা যায়, ২০১৫ সালের ৬ নভেম্বর চুমকির সঙ্গে পটিয়ার কুসুমপুরা বিনিনিহারা গ্রামের জাফর আহমদের পুত্র খোরশেদ আলমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য প্রায় নির্যাতন করা হতো চুমকিকে। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর যৌতুকের ইস্যুতে চুমকিকে পিটিয়ে হত্যা করে গলায় ফাঁস দিয়ে লাগিয়ে ফ্যানে ঝুলিয়ে রাখা হয়। পরে এটিকে আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলে চুমকির পিতা থানায় অভিযোগ করেন। কিন্তু থানায় হত্যা মামলা হিসেবে রেকর্ড না হওয়ায় বাদি পটিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২০১৮ সালের ১৮ নভেম্বর একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালত এক কার্যদিবসের মধ্যে মামলাটি গ্রহণ করে আদালতকে অবহিত করার জন্য ওসি পটিয়াকে নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক ১৮ নভেম্বর হত্যা মামলা হিসেবে থানায় রেকর্ড করা হয়।
এ বিষয়ে পটিয়া আদালতের পিপি বদিউল আলম জানান, পটিয়া থানার তদন্তকারি কর্মকর্তা রেজাউল করিম মজুমদার এ মামলার ফাইনাল রিপোর্ট আদালতে দাখিল করলে এতে নারাজী দেন বাদি গোলাম মোস্তফা। শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি বিজ্ঞ আদালত তা অধিকতর তদন্ত করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন। হত্যাকাণ্ডের সাত মাস পর ওই বছরের ২১ জুন আদালতের নির্দেশে পটিয়ার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাব্বির রহমান সানির উপস্থিতিতে ময়নাতদন্তের জন্য শ্বশুরবাড়ির কবরস্থান থেকে গৃহবধূ চুমকির লাশটি তোলা করা হয়। এরপর দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো করা হয়।
তিনি আরও জানান, দীর্ঘ ১ বছর ৬ মাস পর গত ১ সেপ্টেম্বর আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে সিআইডি। ২১ অক্টোবর সিআইডির তদন্তের রিরুদ্ধে দ্বিতীয় দফায় নারাজি দাখিল করেন মামলার বাদি গোলাম মোস্তফা। শুনানি শেষে মামলাটি অধিক তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন বিজ্ঞ আদালত।
এসএ