চট্টগ্রামে জ্যামিতিক হারে যেমন বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা, তেমনি বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। প্রতিদিনই এক, দুই, তিন করে বেড়ে যাচ্ছে মৃত্যুর সংখ্যা। একদিনেই সর্বোচ্চ মারা গেলেন চারজন।
আবার করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন এমন সংখ্যাও কম নয়। তবে এক্ষেত্রে অনেকের করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। আবার করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া অনেকের মৃত্যুর পরে জানা গেছে করোনা পজিটিভ। চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে কাঁটায় কাঁটায় ৫০।
সর্বশেষ শুক্রবার (২২ মে) সকালে ৪ জন এবং রাতে আরও একজনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছেন সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। চট্টগ্রামে করোনায় গড়ে প্রতিদিন একজনের মৃত্যু ঘটছে। করোনা শনাক্ত হওয়ার ৪৯তম দিনে মারা গেছেন ৫০ জন। যা মোট আক্রান্তের ৪ শতাংশ।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, করোনায় মৃত ৫০ জনের মধ্যে মহানগরীর ৪২ জন এবং বিভিন্ন উপজেলার ৮ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ৩৫ জন এবং নারী ১৫ জন।
চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস শনাক্তের প্রথম ৩০ দিনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান ৬ জন। তবে সেই চিত্র হঠাৎ বদলে গিয়ে গত ১৯ দিনে মৃত্যুর মিছিলে যোগ দিয়েছেন আরও ৪৪ জন।
সর্বশেষ শুক্রবার মারা যাওয়া পাঁচজনই মহানগরীর বাসিন্দা। এদের সবাই পুরুষ। এদের একজন নগরীর কোতোয়ালী মোড় এলাকার ৫১ বছর বয়সী, একজন বায়েজিদ এলাকার ৬৫ বছর বয়সী, একজন ফিরিঙ্গিবাজার এলাকার ৫০ বছর বয়সী, সাগরিকা এলাকার ৪৫ বছর বয়সী একজন এবং অপরজন এস আলম গ্রুপের পরিচালক মোরশেদুল আলম। এর আগে গত ১৭ মে এবং ২১ মে একদিনেই ৪ জন করোনায় মারা যান।
মৃত এই ৫০ জনের মধ্যে জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ১৫ জন। বাকিরা নগরীর বিভিন্ন হাসপাতালে মারা গেছেন। আবার কেউ কেউ মারা গেছেন চিকিৎসা না পেয়ে। মৃত্যুর পর তাদের করোনা পজিটিভ আসে। এছাড়াও করোনা সন্দেহে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন আরও ১১ জন। যদিও মৃত্যুর পর তাদের প্রত্যেকের নমুনা পরীক্ষায় নেগেটিভ এসেছে।
জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আব্দুর রব চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘চট্টগ্রামে করোনায় মারা যাওয়া রোগীর সংখ্যা কিন্তু কম। করোনায় সংক্রমিত হওয়ার পর মৃত্যুর ঝুঁকি তখনই বাড়ে, যখন শ্বাসকষ্টের পাশাপাশি রোগীরা অন্য জটিল সমস্যায় ভুগেন। মূলত তারাই করোনায় মারা যাচ্ছেন।’
একই কথা বললেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বিও। চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে তিনি বললেন, ‘যারা অন্যান্য জটিল রোগে ভুগছেন তারা যদি করোনায় আক্রান্ত হয়, তাহলে মৃত্যুর ঝুঁকি অনেক বেশি বেড়ে যায়।’
এসআর/এসএ