ক্যানপার্ক ও সাগরিকা কানেকশনেই শিল্প পুলিশে করোনার ঢল!

চট্টগ্রামের শিল্প পুলিশে হঠাৎ করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে ঠেকলো ৩৯ জনে। শুক্রবার (২২ মে) একসঙ্গে নয় সদস্য করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হওয়ায় পোশাক ও শিল্প কারখানার নিরাপত্তায় নিয়োজিত এই বাহিনীর কর্তারাও হকচকিয়ে গেছেন। এখন তারা মেলাচ্ছেন নানান হিসাব। পুলিশের এই ইউনিটে কিভাবে করোনার সংযোগ হলো— সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে উঠে এলো আনোয়ারা উপজেলার কোরিয়ান ইপিজেডের ক্যানপার্ক অ্যাপারেলস এবং পাহাড়তলী থানার সাগরিকা এলাকার নাম। এটাই যদি সত্যি হয়, তাহলে কোরিয়ান ইপিজেড ও সাগরিকা এলাকায় করোনাভাইরাসের বিস্তার নিয়ে আশঙ্কাটা বড় হয়েই দেখা দিচ্ছে।

প্রায় সাড়ে ৬০০ সদস্য নিয়ে শিল্প পুলিশের চট্টগ্রাম ইউনিট। এই ইউনিটের উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘কোরিয়ান ইপিজেডে ক্যানপার্ক এপারেলসে কর্মরত শ্রীলঙ্কান এক নাগরিকের শরীরে চলতি মাসের শুরুর দিকে করোনা শনাক্ত হয়। তার সংস্পর্শে এসেছিলেন অনেক কর্মকর্তা। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাদের সংস্পর্শে এসেছিল আমার ইউনিটের কয়েকজন সদস্য।’

‘ঠিক একই সময়ে নগরীর সাগরিকা এলাকায় গার্মেন্টস কর্মকর্তাসহ এলাকার কয়েকজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। ওই এলাকায় আমাদের ফোর্স দায়িত্ব পালন করেছে। এর আগে এপ্রিল মাসের বেতনের দাবিতে শ্রমিকরা রাস্তায় নেমেছিল। তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে আমাদের ফোর্স তাদের সংস্পর্শে এসেছে’— যোগ করেন তিনি।

এই তিনটি বিষয় প্রাথমিক পর্যালোচনায় উঠে আসছে বলে জানান শিল্প পুলিশের ওই কর্মকর্তা। তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রামে করোনা চিকিৎসা ব্যবস্থার নানা সংকটের কারণে আমি কোনরকম ঝুঁকি না নিয়ে আক্রান্তদের একটা অংশকে ঢাকা রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছি।’

শিল্প পুলিশের আরেক কর্মকর্তা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, বাসস্থান সংকটে গাদাগাদি করে বসবাস করার কারণে করোনা খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে শিল্প পুলিশের সদস্যদের শরীরে। শনাক্ত হওয়া পুলিশ সদস্য এবং যাদের করোনার লক্ষণ আছে তাদেরকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। তাদের সংস্পর্শে যারা আসছে তাদের কোয়ারেন্টাইনে রেখে নমুনা পাঠানো হয়েছে পরীক্ষা করার জন্য।

প্রসঙ্গত, ৬ মে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় ক্যানপার্ক কর্মকর্তা ওই শ্রীলঙ্কান নাগরিকের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছিল। শরীরে করোনার উপসর্গ থাকায় তিনি নিজ থেকে ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি ল্যাবে নমুনা দিয়ে এসেছিলেন। এই ঘটনায় তার দক্ষিণ খুলশীর বাসস্থান লকডাউন করা হলেও কর্মস্থলের বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং সমালোচনার মধ্যেও আনোয়ারার কোরিয়ান ইপিজেড চালু ছিল পুরোদমে।

সর্বশেষ ২২ মে পর্যন্ত চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দেড় হাজার ছুঁই ছুঁই। এই অবস্থায় শিল্প পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা সাধারণ সদস্যদের মনোবল ধরে রাখতেও কাজ করছেন বলে জানা গেছে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!