‘সেক্সের বদলে কাজ করবো না’— অমিতাভ রেজার মুখের ওপর ‘না’ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর

এখন ‘ফেক আইডি’ বললেও এসেছিলেন ভিডিও কলে

চলচ্চিত্র পরিচালক ও বিজ্ঞাপননির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরীর বিরুদ্ধে কাজের সুযোগ দেওয়ার বিনিময়ে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। শুধু তাই নয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ওই ছাত্রী অশালীন সেসব কথোপকথনের স্ক্রিনশটও প্রকাশ করেছেন।

এদিকে এই ঘটনা প্রকাশ পাওয়ার ফেসবুকে আরও অনেক মেয়েই বিভিন্ন সময়ে অমিতাভ রেজা চৌধুরীর দেওয়া ‘অনৈতিক প্রস্তাব’ নিয়ে মুখ খুলেছেন। সামাজিক সম্মানের ভয়ে এতোদিন তারা চুপ থাকলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা যৌন হয়রানির মামলা করারও ঘোষণা দিয়েছেন।

তবে ওই ছাত্রীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অমিতাভ রেজা তার ভেরিফায়েড ফেসবুক থেকে দুটি ‘অমিতাভ রেজা’ আইডির ছবি প্রকাশ করে জানিয়েছেন, ‘এগুলো তার ফেক আইডি।’ তিনি লিখেছেন, ‘স্ক্রিনশটে যে ফেসবুক একাউন্টটি দেখতে পাচ্ছেন এটা একটা ফেক/ভুয়া একাউন্ট। আমার নামে খোলা এমন অনেক ভুয়া একাউন্টে ফেসবুক এখন সয়লাব। অনেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে চেয়ে এই সমস্ত ভুয়া একাউন্ট দ্বারা বিভ্রান্ত হচ্ছেন। আমার পরিচয় ব্যবহার করে এই সব ভুয়া একাউন্ট থেকে যারা অন্যদের সাথে প্রতারণা করে যাচ্ছেন; অনুরোধ করব এই কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকুন।’

তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে ফোনে জানিয়েছেন, ‘অমিতাভ রেজা ভুয়া বললেও দুটোই তার আইডি। দুই আইডি থেকেই তার সঙ্গে কথা হয়েছে। তার যে ভেরিফাইড আইডি, সেটা থেকে ভিডিও কলেও কথা হয়েছে। ফলে তার চেহারা দেখারও সুযোগ হয়েছে।’

এদিকে ফেসবুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী অভিযোগ করেছেন, মুঠোফোন প্রতিষ্ঠান বাংলালিংকের একটি বিজ্ঞাপন ও বিলবোর্ডে সুযোগ দেওয়ার কথা বলে অমিতাভ রেজা চৌধুরী তাকে প্রযোজকের সঙ্গে বিছানায় যাওয়ার প্রস্তাব দেন সরাসরি।

‘সেক্সের বদলে কাজ করবো না’— অমিতাভ রেজার মুখের ওপর ‘না’ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর 1
‘সেক্সের বদলে কাজ করবো না’— অমিতাভ রেজার মুখের ওপর ‘না’ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর 2

ওই নারী কথোপকথনের অনেকগুলো স্ক্রিনশট ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘অমিতাভ রেজা চৌধুরী! তার ফ্যান ফলোয়ার এর অভাব নাই নিশ্চয়ই। আয়নাবাজি দেখার পর আমিও তার মোটামুটি ফ্যান বলা চলে। কয়েক বছর হইলো উনি আমার লিস্টে রয়েছেন। কয়েকবার আলাপ হয়েছে ক্যাম্পাস লাইফ নিয়ে। আজ হঠাৎ আমার ডে’র ক্লিভেজ বের করা ছবি দেখে আমাকে নক দ্যান তিনি (যেটা আমি প্রথমে খেয়াল করিনাই) তারপর শুটের অফার দিলো এবং বাকি কথা সব স্ক্রিনশটে দেয়া আছে। দেখেন!’

তিনি বলেন, ‘যারা বলছে, এটা তার ফেইক আইডি, তার ভেরিফাইড আইডি আছে। তাদের জন্য ব্রো তার সাথে আমার ভিডিও কলেও কথা হয়েছে যার স্ক্রিনশটও দিলাম।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী আরও লিখেছেন, ‘তার দুইটা আইডিই আমার লিস্টে ছিলো। এরপর সে আমাকে শুট এর জন্য অনেক কিছু বললো; বাংলালিংক এর বিশাল শুট, বিলবোর্ড হবে ব্লা ব্লা। তারপর শর্ত হিসেবে বললো আজকে প্রডিউসার এর সাথে সেক্স করতে হবে! না করে দিলাম যার কারণে দুইটা আইডি থেকেই আনফ্রেন্ড মারলো।’

ভিডিও কলে অমিতাভ রেজার সঙ্গে কথা হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে ওই ছাত্রী বলেন, ‘আমি প্রথমেই বলেছি অমিতাভ রেজার সাথে আমার আগেও কথা হয়েছে। তার দুই অ্যাকাউন্ট থেকেই কথা বলেছেন তিনি আমার সাথে, হ্যা ভ্যারিফাইড অ্যাকাউন্ট থেকেও কথা হয়েছে। সেই স্ক্রিনশটও দিবো, গোছায়ে নেই। আমার এই পোস্ট ছড়ানোর সাথে সাথেই তিনি ভ্যারিফাইড অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট দিয়েছেন যে এটা তার নামে খোলা ফেক আইডি। আমার ভুল হয়েছে যে আমি ভিডিও কলের স্ক্রিনশট রাখিনি। তিনি আমাকে ভিডিও কল দিয়ে যাচ্ছিলেন, আমি তখন রান্না করছিলাম। আমি বললাম, আমি কেবলই ঘুম থেকে উঠেছি। এখন কিভাবে সম্ভব? তিনি বললেন যে তিনি আমার ফেসই দেখতে চান।’

‘তারপর রুমে এসে আমি তার কল পিক করার পর কলে এসে তিনি আমাকে কিছুক্ষণ দেখলেন। আমি হাই দিলাম তাকে; তখন সে কথার উত্তর না দিয়ে আশেপাশে ক্যামেরা ঘুরিয়ে স্টুডিও দেখিয়ে ইশারায় বললেন, কথা বলা যাবে না। তারপর কল কেটে দিলেন। এটা কোনোভাবেই তার ফেক আইডি না। ইভেন আমি এই পোস্ট দেয়ার পর আমার কাছে ৬/৭ জন মেসেজ দিয়ে তার ব্যাপারে এইসব বলছে। অনেকের হাত কাঁপছে, তারা বলতে পারছে না। কিন্তু আমাকে দেখে নাকি তারা বলার সাহস পাচ্ছে। আমি সেইসব স্ক্রিনশটও গুছিয়ে নিচ্ছি, তাদের সাথে অমিতাভের চ্যাটগুলো। ফেক আইডির নাম করে সব জায়গায় লুচ্চামি করা বের করছি ওনার’— ক্ষোভ ঝাড়লেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী।

‘আয়নাবাজি’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা অমিতাভ রেজা চৌধুরী ২০০৭ সালে বিয়ে করেছিলেন অভিনেত্রী জেনিকে। চার বছর সংসার করার পর তাদের বিচ্ছেদ ঘটে। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সহকর্মী মিম রশিদকে বিয়ে করেন। দুই বছর পর ২০১৬ সালে মিম রশিদের সাথে তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!