সীতাকুণ্ডে কন্টেইনার ডিপো নির্মাণের বিরুদ্ধে নামল এলাকাবাসী

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের দক্ষিণ সোনাইছড়ি ইউনিয়নে গামারীতলা গ্রামের ভেতর কন্টেইনার ডিপো নির্মাণ করছে প্রভাবশালী মহল। এর প্রতিবাদ করায় ১৭ জনের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগ দিয়েছেন ব্যবসায়ী নুরুল আলম চৌধুরী। অভিযোগে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা চাওয়া হয় বলে জানান তিনি।

এ নিয়ে সোমবার (২২ আগস্ট) কন্টেইনার ডিপো নির্মাণ বন্ধ এবং এলাকাবাসীকে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ বলে অভিযোগ করার প্রতিবাদে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

এলাকাবাসীর পক্ষে সোনাইছড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. মাহবুবুল আলম (বাবুল) লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। তিনি জানান, গামারিতলা গ্রামের ভেতর মোস্তফা হাকিম প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গামারিতলা জামে মসজিদের সঙ্গে লাগোয়া ২ একর ৬২ শতক জায়গায় কন্টেইনার ডিপো স্থাপনের উদ্যোগ নেন নুরুল আলম চৌধুরী নামে এক প্রভাবশালী। এতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থী, অভিভাবক, মসজিদের নিয়মিত নামাজি ও এলাকাবাসীর মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।

তিনি জানান, গ্রামবাসী ও ছাত্রছাত্রীদের চলার পথে শত শত গাড়ির বেপরোয়া আসা-যাওয়ার কারণে এলাকাবাসী ও ছাত্রছাত্রীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। এরমধ্যে কয়েকটি দুর্ঘটনাও ঘটে। কন্টেইনার ডিপোতে শত শত ড্রাইভার ও হেলপারের কারণে পুরো এলাকা মাদকে সয়লাব হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এদের হাতে বিদ্যালয় ও কলেজে পড়ুয়া ছাত্রীরা ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছে। গাড়িগুলোর বেপরোয়া চলাচল ও বিকট হর্ণের শব্দ দূষণের কারণে মুসল্লিদের ইবাদতে বিঘ্ন হচ্ছে। প্রতিদিন বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ ও মালামালবাহী ৫০০-৬০০ গাড়ি প্রতিদিন আসা-যাওয়া করে এলাকায়।

তিনি আরও জানান, এর প্রতিবাদে ১১ আগস্ট চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সীতাকুণ্ড থানার ওসি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে এলাকাবাসী। অভিযোগ দেওয়ার পর নুরুল আলম চৌধুরী ক্ষিপ্ত হয়ে ১১ আগস্ট গভীর রাতে বহিরাগত সন্ত্রাসী এনে এলাকাবাসীর ওপর হামলা চালানোর চেষ্টা করে। এতে আমাদের গ্রামের দোকানের পাহারাদার আহত হন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, সোনাইছড়ি গ্রামে কন্টেইনার ডিপো স্থাপনের বিরুদ্ধে আমরা সর্বস্তরের গ্রামবাসী ঐক্যবদ্ধ রয়েছি। কেননা কন্টেইনার কাভার্ডভ্যান টার্মিনাল (কন্টেইনার ডিপো) স্থাপন হলে গ্রামের ছাত্রছাত্রীসহ জনসাধারণ চরম দুর্ভোগের শিকার হবে। গ্রাম বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। এতে করে এলাকাবাসী সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার হতে বঞ্চিত হবে। দক্ষিণ সোনাইছড়ি গ্রামে ঘনবসতিপূর্ণ স্থানে ওই ডিপো যাতে স্থাপন করতে না পারে, আপনাদের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসন ও উচ্চপদস্থ মহলের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

গত ৪ জুন সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোতে স্মরণকালের ভয়াবহ বিস্ফোরণে ৫১ জন নিহত হয়, আহত হয় দুই শতধিক। বিস্ফোরণে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকার বাড়িঘর ক্ষয়ক্ষতি হয়। এ কথা চিন্তা করে অবিলম্বে কন্টেইনার ডিপো নির্মাণ বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয় এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে।

আরএম/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!