সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে সংঘর্ষে জড়াল মহিউদ্দিন ও শফি-কুদ্দুস গ্রুপ

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন আয়োজিত মাদক, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে যোগদানকালে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। নগরীর নন্দনকানন এলাকায় বায়েজিদের আবু মোহাম্মদ মহিউদ্দিন গ্রুপ ও শফি-কুদ্দুস গ্রুপের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে হওয়া এই সংঘর্ষে দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। এ সময় সমাবেশে যোগ না দিয়েই ফিরে যেতে হয় আবু মহিউদ্দিনের অনুসারীদের।

হামলার জন্য জালালাবাদের কাউন্সিলর সাহেদ ইকবাল বাবুকে দায়ী করছেন আবু মহিউদ্দিনের অনুসারীরা। তবে বাবু বলছেন থার্টি ফার্স্ট নাইটে খুন হওয়া রিপন হত্যার আসামিদের নিয়ে মহিউদ্দিনের অনুসারীরাই তার সঙ্গে আসা লোকজনের ওপর হামলা চালায়। মূলত রিপন হত্যার বাদীকে তুলে নেওয়ার জন্য হামলা চালিয়েছিল মহিউদ্দিনের অনুসারীরা।

চট্টগ্রাম পলিটেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট ছাত্র সংসদের ভিপি কাম্বার হোসেন রকি চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা চট্টগ্রাম পলিটেকনিক্যাল ছাত্র সংসদের নেতাকর্মীরা ট্রাক মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দিতে নন্দনকানন আসি। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল আমাদের। আমাদের সংসদের সাবেক নেতারাও আমাদের সাথে ছিলেন। সেখানে নামতেই কাউন্সিলর বাবুর অনুসারীদের সেখানে দেখি। শফি-কুদ্দুস দুজনও সেখানে ছিল। এ সময় আমাদের দেখে তারা কিছুটা মারমুখী আচরণ করলে আমরা তাদের জায়গা করে দিই। তারা মিছিল নিয়ে চলে যাওয়ার পর আমরা মিছিল শুরু করি। মিছিল নিয়ে একটু সামনে যেতেই রাস্তার দুপাশ থেকে আমাদের ওপর বৃষ্টির মত পাথর নিক্ষেপ শুরু হয়।’

তবে এই অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে কাউন্সিলর সাহেদ ইকবাল বাবু চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেওয়ার পরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আমরা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দসহ মিছিল নিয়ে সমাবেশে যাই। আমাদের সাথে আসা কিছু লোক পিছিয়ে পড়েছিল। সেখানে রিপন হত্যার বাদী ছিল। মনিরের নেতৃত্বে একটি মিছিলে রিপন হত্যার আসামিরা ছিল। পথে তারা রিপন হত্যার বাদীকে সামনে পেলে তাকে মারধর করে তুলে নিয়ে যেতে চাইলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আমি সমাবেশ থেকে এসে কয়েকজনকে আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠিয়েছি।
এই ঘটনায় আহত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন চট্টগ্রাম পলেটেকনিক্যাল ইন্সটিটিউটের জিএস শাহাদাৎ হোসেন ওমর। চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে ওমর বলেন, আমদের মিছিল সামনে ছিল। কিন্তু কাউন্সিলর বাবুর মিছিল দেখতেই আমরা তাদের জায়গা করে দিই। মিছিলটি সামনে চলে যাওয়ার পর ডিসি হিলের মোড়ে আমাদের ওপর হামলা হয়। এ সময় শফিকুল ইসলাম শফিসহ বাপ্পী ও তানভীর আমাকে অস্ত্র ধরে মারধরও করে। ওই এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজগুলো চেক করলেই সত্য মিথ্যা জানা যাবে।’

এই বিষয়ে জানতে চাইলে শফিকুল ইসলাম শফি বলেন, ‘আমরা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগসহ স্থানীয় এলাকাবাসী সিটি কর্পোরেশনের সমাবেশে যাচ্ছিলাম। আমি সংযুক্ত আরব আমিরাত কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। দুবাইয়ের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী আমি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত করেছি। আমি কেন অস্ত্রের রাজনীতি করতে যাব? আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বলছি এই ধরনের কোন ঘটনাই ঘটেনি। এসব কিছুই বানোয়াট। বরং পলিটেকনিক্যালের মনির আগে থেকে সেখানে টেম্পোতে ইট পাথর আর লাঠিসোটা এনে জমা করে রেখেছিল। রিপন হত্যার বাদির ওপর তারা অতর্কিত হামলা করে। গত কয়েক বছর ধরে মহিউদ্দিন বায়েজিদে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আমরা কোন গণ্ডগোল করিনি।’

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!