মাজারে বিয়ে পুলিশ কর্তার, এখন স্ত্রী-সন্তানকেই অস্বীকার

পারিবারিক একটি বিষয় নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে সেখানে পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে পরিচয় হয় এক নারীর। ওই পরিচয়ের সুবাদে মোবাইল ফোনে দীর্ঘদিন কথা হয় তাদের। একপর্যায়ে গড়ে উঠে প্রেমের সম্পর্ক। দুইজনের সিদ্ধান্তেই চট্টগ্রামের একটি মাজারে বিয়ে হয় তাদের। বিয়ের পর ঠিকঠাকই চলছিল তাদের ছোট সংসার। ওই সংসারে জন্ম নেয় চার বছর বয়সী একটি পুত্র সন্তানও। সম্প্রতি বাসায় যাওয়া-আসা বন্ধ করে দেন এই পলিশ কর্মকর্তা। এখন অস্বীকার করছেন স্ত্রী ও সন্তানকেও।

স্ত্রী ও সন্তানের অধিকার আদায় করতে চলতি বছরের ২ আগস্ট চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার বরাবর অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ওই নারী।

সিএমপি’র সহকারী পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ জোন) বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী নাসরিন আক্তার হিরা (৪০)। একই সঙ্গে আইজিপি বরাবরেও লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। বর্তমানে সরকারের আইন সহায়তা কেন্দ্র লীগ্যাল এইড-এর দ্বারস্থ হয়েছেন নাসরিন আক্তার হিরা।
মাজারে বিয়ে পুলিশ কর্তার, এখন স্ত্রী-সন্তানকেই অস্বীকার 1
অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার নাম সেলিম সরকার। তিনি সিএমপির চকবাজার থানায় সহকারী উপ পরিদর্শক (এএসআই) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি নাটোর জেলার নাটের থানার প্রাণ কোম্পানী অফিস সংলগ্ন সরকার বাড়ির সুলতান সরকারের পুত্র।

অভিযোগ পত্রে উল্লেখ রয়েছে, ২০১৪ সালে পুলিশের এএসআই সেলিমের সঙ্গে পরিচয় হয় নাসরিন আক্তার হিরার। ২০১৫ সালের ২ সেপ্টেম্বর ১০ লাখ টাকার দেনমোহরে বিয়ে হয় তাদের। চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী (রহ.) মাজারে তাদের এ বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের পরপরই রেজিস্ট্রি করতে বারবার বলার পরও সেলিম সুকৌশলে এড়িয়ে গেলে পরে আর করা হয়নি। তাদের সংসারে ইয়াসিন ইসলাম (৪) নামে একটি পুত্র সন্তানও রয়েছে। বিয়ের পর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ঋণদান সমিতি থেকে ৬ লাখ টাকা ধার করে দিয়েছেন তিনি স্বামী সেলিমকে। এসব টাকা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েও সেলিম কালক্ষেপন করে আর দেননি। সেলিমকে ঋণের টাকার জন্য চাপ দিলে উল্টো ৫ লাখ টাকা যৌতুক চায় সেলিম।

ঋণের টাকা চাইতে গিয়ে উল্টোর যৌতুকের শিকার হয়ে বিভিন্ন সময়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেন সেলিম- এমনটাই দাবি করেন ভূক্তভোগী এই নারী।

অভিযোগের বিষয়ে চকবাজার থানার এএসআই সেলিম সরকার বলেন, ‌‌‌’আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমাকে আরেকটা পত্রিকাও ফোন দিয়েছে এ ব্যাপারে। ওই মহিলা একজন বাটপার। আমাকে ব্ল্যাকমেইল করছে। আমি এখনও শুরু করিনি। আমি শুরু ককরলে ওই মহিলা টিকতে পারবে না। মুঠোফোনে কথা বলার একপর্যায়ে প্রতিবেদকের সঙ্গে অফিসে এসেই দেখা করার অনুরোধ করেন এই কর্মকর্তা।’

বিষয়টি নিশ্চিত করে নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (চকবাজারজোন) কামরুল ইসলাম বলেন, ‘সেলিম সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি আমরা। তদন্তে প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

মুআ/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!