বাড়ির আঙিনায় প্রতিদিন ৩০০ মানুষের সেহরি আয়োজন সাবেক ছাত্রনেতা ইয়াসিরের

সেহরির সময় হলেই একে একে আসতে শুরু করেন চট্টগ্রাম নগরীর অসহায়-ছিন্নমূল মানুষ থেকে এতিমখানার ছাত্র। সবাই বসে পড়েন এক কাতারে৷ এরপর সেহেরিতে ভাতের সঙ্গে তাদের পাতে থাকে মুরগির মাংস, ডিম, মাছ, গরুর ভুনা, সবজি, শুঁটকি, ঘন ডাল। আবার কখনও থাকে বিরিয়ানিও। খাবার শেষ করলেও থাকে না কোনো বিল দেওয়ার চিন্তা।

সেহরি

এভাবে রমজান মাসব্যাপী বিনামূল্যে প্রতিদিন প্রায় ৩০০ মানুষের খাবারের আয়োজন করে আসছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি সাবেক সহসম্পাদক ইয়াছির আরাফাত।

চট্টগ্রাম নগরীর আলকরণ এলাকায় নিজ বাড়ির আঙিনায় এই আয়োজন করেছেন ইয়াছির আরাফাত। গত তিন বছর ধরে চলছে এই আয়োজন। প্রতিদিন রাত আড়াইটার পর লোক সমাগম বাড়তে থাকে ইয়াসিরের বাড়িতে। এভাবে চলে আজান পর্যন্ত।

এ বিষয়ে ইয়াছির আরাফাত বলেন, ‘আমার এলাকায় দেখে আসছি অনেক দিনমজুর, চাকরিজীবী ও সাধারণ মানুষ আছে। কিন্তু তারা সেহরি ঠিক মত করতে পারছেন না। অনেকের টাকার সমস্যা, অনেকের আবার সেহরিতে হোটেল খোলা না থাকা বা জায়গার অভাবে সেহরি করতে পারছেন না। তখনই সিদ্ধান্ত নিই, আমাদের বাড়ির আঙিনায় সবাইকে একত্রিত করে আমার পরিবারসহ সেহরি করব। গত তিন বছরের ধারাবাহিকতায় এই বছরও মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে পবিত্র রমজানে মাসব্যাপী গরিব-এতিমদের জন্য সেহরির আয়োজন করেছি। চাঁদরাত পর্যন্ত চলবে আমাদের এই বিনামূল্যে সেহরি আয়োজন।’

তিনি আরও বলেন, আমাদের আয়োজন সফল করতে তিনজন বাবুর্চি ও ১৫-২০ জন স্বেচ্ছাসেবক আছেন। স্বেচ্ছাসেবকদের সবাই শিক্ষার্থী। ২০-২৫ জনের একটি টিম কাজ করছে আমার সঙ্গে। রাত আড়াইটার দিকে সকলে মিলে জামায়াত সহকারে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করি। এরপর নগরীর অসহায়, ছিন্নমূল মানুষ ছাড়াও দুইটি এতিমখানা থেকে ৭১ জন ছাত্র নিয়মিত সেহরিতে অংশগ্রহণ করেন। প্রতিদিন আজানের আগপর্যন্ত চলে সেহরি খাওয়ার আয়োজন।’

ইয়াসির বলেন, ‘কখনো ৩০০ এর বেশি মানুষ হয়ে গেলে আমরা তৎক্ষণাৎ আবার রান্না বসিয়ে দিয়ে অতিরিক্ত মানুষের চাপ সামলিয়ে নিই। সকলের দোয়ায় সমাজের মানুষের জন্য কিছু করার চেষ্টা করছি। আমার কাজ দেখে কেউ না কেউ হয়তো অনুপ্রাণিত হয়ে আগামী রমজানে অসহায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়ায়, এটাই আমার প্রাপ্তি।’

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!