ফেসবুকে চট্টগ্রামের নারী ডাক্তারের নামে পেইজ খুলে টাকা হাতাচ্ছিল ঝিনাইদহের যুবক

চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত এক নারী চিকিৎসকের নামে ফেসবুক পেইজ খুলে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন ঝিনাইদহের এক যুব্ক।

ফেসবুকে চট্টগ্রামের নারী ডাক্তারের নামে পেইজ খুলে টাকা হাতাচ্ছিল ঝিনাইদহের যুবক 1

মঙ্গলবার (৮ মার্চ) দুপুরে ঝিনাইদহের নলডাঙ্গার আড়মুখী বাজার এলাকা থেকে অভিযুক্ত সেই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম নগরীর আকবরশাহ থানা পুলিশ। ওই যুবকের নাম মিরাজ উদ্দিন (২২)। তিনি ঝিনাইদহের ১৭ নম্বর নলডাঙ্গার আড়মুখী বাজার এলাকার আব্দুল হাকিম বিশ্বাস বাড়ির আবু বক্কর ছিদ্দিকের ছেলে।

পুলিশ জানিয়েছে, চট্টগ্রাম নগরীর ম্যাক্স হাসপাতালে কর্মরত স্ত্রী ও চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. নুসরাত সুলতানার নামে ভুয়া ফেসবুক একাউন্ট খোলেন মিরাজ। পরে ওই চিকিৎসকের নাম দিয়ে আরও একটি পেজ চালু করেন ফেসবুকে। সেখানে বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশন (বিএফএফ) সংগঠনের নাম দিয়ে একটি স্কিন লেজার সেন্টার স্থাপনের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে বিকাশের মাধ্যমে অর্থ সাহায্যের আবেদন জানানো হয়।

ভুয়া সেই আবেদনে কেউ সাড়া দিলে সেই টাকা হাতিয়ে নিতেন ওই যুবক। এভাবে দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকলেও গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগী চিকিৎসক নুসরাত সুলতানা তার নাম দিয়ে ভুয়া একাউন্ট ও পেজ খোলার বিষয়টি জানতে পারেন। এর পরপরই ডা. নুসরাতের স্বামী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন বিষয়টি পুলিশকে জানান।

এর তিন দিন পর ২২ ফেব্রুয়ারি ওই চিকিৎসক নগরীর আকবরশাহ থানায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের কথা উল্লেখ করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। এরপর অভিযান চালিয়ে প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (পশ্চিম) মো. আব্দুল ওয়ারীশ জানান, প্রযুক্তির সহায়তায় ওই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে সে ভুয়া আইডি ও পেজ চালু করার কথা স্বীকার করেছে। তার কাছ থেকে অর্থ আদায়ের কাজে একটি মোবাইল ও বিকাশ রেজিস্ট্রেশন করা গ্রামীণফোনের দুটি সিমকার্ড জব্দ করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার হওয়া মিরাজ উদ্দিন (২২) ইরাকফেরত প্রবাসী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ফেসবুকে বেশি সংখ্যক ফলোয়ারধারী, স্বনামধন্য এবং জনপ্রিয় ব্যক্তিদের ফেসবুক আইডির প্রোফাইল থেকে তাদের ছবি সংগ্রহ করে তাদের নামে ভুয়া ফেসবুক আইডি ও পেইজ খুলে আসছেন।

পরবর্তীতে ওই ভুয়া ফেসবুক আইডিগুলো কিছুদিন অ্যাকটিভ রেখে ওই ভুয়া আইডিগুলোতে বেশিসংখ্যক ফ্রেন্ড অ্যাড করে নেন। যখন বেশি সংখ্যক ফ্রেন্ড অ্যাড হয়ে যায়, তখন মিরাজ সুকৌশলে ফেসবুকের বিভিন্ন পেইজ থেকে বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর মানবিক ঘটনা এবং অসহায় মানুষের ছবি সংগ্রহ করে নিজেকে মানবিক সংস্থার কর্মী পরিচয় দিয়ে সাহায্য প্রার্থনা করে বিকাশের মাধ্যমে নগদ অর্থ সহায়তা চেয়ে থাকেন।

আরএম/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!