ফাঁসিতে ঝুলবে লালদিঘিতে ২৪ আ’লীগ নেতাকর্মী হত্যা মামলার ৫ আসামি

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে হামলা চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যার অপরাধে অভিযুক্তদের ৮ জনের মধ্যে জীবিত ৫ আসামির ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ মো. ইসমাইল হোসেনের আদালত এই আদেশ দেন।

ফাঁসির দণ্ডাদেশ প্রাপ্তরা হলেন, পুলিশের তৎকালীন হাবিলদার প্রদীপ বড়ুয়া, কনস্টেবল মমতাজ উদ্দিন, মোস্তাফিজুর রহমান, মো. আব্দুল্লাহ ও গোপাল চন্দ্র (জেসি) মণ্ডল।

জেসি মণ্ডল ঘটনার পর থেকে নিরুদ্দেশ। বাকী চারজন রায় ঘোষণার সময় আদালত কাস্টডিতে উপস্থিত ছিলেন।

এই মামলার অন্যতম সাক্ষী এডভোকেট সম্ভুচন্দ্র নন্দী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, আদালত এই রায় ঘোষণার পর পর্যবেক্ষণে বলেন ২৩ জানুয়ারি ১৯৮৮ সালের এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। খুনিদের লক্ষ্য ছিল বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই রায়ের মাধ্যমে আমরা কলঙ্কমুক্ত হলাম।

এর আগে ১৯ জানুয়ারি চার আসামি সাফাই সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষ্য গ্রহণ ও রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে ৪ আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

এ মামলার অপর ৩ আসামির মধ্যে প্রধান আসামি চট্টগ্রামের তৎকালীন পুলিশ কমিশনার মীর্জা রকিবুল হুদা, কনস্টেবল বশির উদ্দিন ও আব্দুস সালাম মৃত্যুবরণ করেছেন।

আসামি পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার সাইয়্যেদ মঈনুল আহসান জানান, আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবো। কারণ দণ্ডাদেশ প্রাপ্তদের চারজন সেদিন কেউই ঘটনাস্থলে ছিলেন না। আমরা আদালতে তার প্রমাণও দিয়েছি।

ফাঁসিতে ঝুলবে লালদিঘিতে ২৪ আ'লীগ নেতাকর্মী হত্যা মামলার ৫ আসামি 1

প্রসঙ্গত, ২৪ জানুয়ারি ১৯৮৮ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা লালদিঘীতে জনসভা ও চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় করতে আসার পথে নিউ মার্কেট মোড় অতিক্রম করে জিপিওর সামনে আসলেই আচমকা গর্জে উঠেছিল চট্টগ্রাম নগর পুলিশের রাইফেল। এলোপাথাড়ি গুলিতে একে একে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন মো. হাসান মুরাদ, মহিউদ্দিন শামীম, এথলেবার্ট গোমেজ কিশোর, স্বপন কুমার বিশ্বাস, স্বপন চৌধুরী, পঙ্কজ বৈদ্য, বাহার উদ্দিন, চান্দ মিয়া, অজিত সরকার, রমেশ বৈদ্য, বদরুল আলম, ডি কে চৌধুরী, পলাশ দত্ত, আব্দুল কুদ্দুস, গোবিন্দ দাশ, শাহাদাত, সাজ্জাদ হোসেন, আব্দুল মান্নান, সবুজ হোসেন, কামাল হোসেন, বি কে দাশ, সমর দত্ত, হাসেম মিয়া ও মো. কাসেম।

৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ স্বৈরাচার এরশাদের পতনের পর ১৯৯২ সালের ৫ মার্চ আইনজীবী মো. শহীদুল হুদা বাদি হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর মামলাটি পুনরায় প্রাণ ফিরে পায়। আদালতের আদেশে মামলাটির তদন্তের ভার পড়ে সিআইডির ওপর। সিআইডি ১৯৯৭ সালের ১২ জানুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে আদালতে। আবারও আদালতের নির্দেশে অধিকতর তদন্ত শেষে ১৯৯৮ সালের ৩ নভেম্বর পুলিশের আট সদস্যকে আসামি করে দ্বিতীয় দফায় অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

এফএম/এসএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!