ফতেয়াবাদে ৫০ একর জায়গায় বর্জ্য ফেলবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, ক্ষোভে ফুঁসছে স্থানীয়রা

কেনা হয়েছে ৫ একর জায়গা, আরও কিনবে ৪৫ একর

চট্টগ্রাম নগরীর দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডের ফতেয়াবাদ সন্দ্বীপ কলোনিতে ৫০ একর জায়গায় বর্জ্যাগার (ল্যান্ডফিল) স্থাপন করবে সিটি কর্পোরেশন। গৃহস্থালি, সড়ক ও অবকাঠামোগত ও মেডিকেল বর্জ্য এখানে ফেলা হবে। তবে এই বর্জ্যাগার এখানে স্থাপন না করার দাবি জানিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা।

এনিয়ে বুধবার (১১ অক্টোবর) বিকালে ফতেয়াবাদ সিটি কর্পোরেশন ডিগ্রি কলেজ মাঠে এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে বক্তারা বর্জ্যাগার স্থাপন না করার দাবি জানান। একইসঙ্গে তাদের দাবি মানা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারিও দেন।

জানা গেছে, দক্ষিণ পাহাড়তলী ১ নম্বর ওয়ার্ডে বর্জ্যাগার স্থাপনের জন্য ইতোমধ্যে পাঁচ একর জায়গা কিনেছে সিটি কর্পোরেশন। তবে আরও ৪৫ একর জায়গা কেনার প্রক্রিয়া চলছে। চট্টগ্রাম নগরীর গৃহস্থালি বর্জ্য ও অবকাঠামোগত বর্জ্যের সঙ্গে মেডিকেলের বর্জ্যও এখানে আনা হবে। চট্টগ্রাম নগরীর ৪১ ওয়ার্ডে দৈনিক ৩ হাজার টন বর্জ্য উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে ১ হাজার ৮৩০ টন গৃহস্থালি, ৫১০ টন সড়ক ও অবকাঠামোগত এবং ৬৬০ টন মেডিকেল বর্জ্য।

এদিকে সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাফর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমদের পরিচালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্য বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আলী আরশাদ চৌধুরী, দক্ষিণ পাহাড়তলী বসতভিটা রক্ষা কমিটির সদস্যসচিব সিরাজুল ইসলাম, গাজী ইউসুফ, মো. নজরুল, আবদুল ওয়াজেদ, নাজিম উদ্দিন, গাজী তৈয়ব ও গাজী আক্কাস।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর সন্দ্বীপ কলোনির উত্তরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশ বিদ্যা ইনস্টিটিউট, দক্ষিণে চট্টগ্রাম সেনানিবাস। এখানে বর্জ্যাগার স্থাপন হলে এলাকার পরিবেশ দূষিত হবে। পাশাপাশি পুরো চট্টগ্রাম শহরের বর্জ্যাগার শহরের এক প্রান্তে দক্ষিণ পাহাড়তলীতে পরিবহনের সময় সড়কে অস্বস্তিতে থাকবে যাত্রীরা।

বক্তারা আরও বলেন, বেশির ভাগ সময় খোলা ট্রাকে করে বর্জ্য পরিবহন করা হয়। সেখানে বিভিন্ন ক্লিনিক্যাল বর্জ্যও থাকে। জনবসতিপূর্ণ এলাকার মধ্যদিয়ে বর্জ্যাগারগুলো পরিবহন করতে হবে। এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এবং সেনানিবাসে থাকা ব্যক্তিরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

সন্দ্বীপ কলোনিতে এই বর্জ্যাগার স্থাপন প্রক্রিয়া বাতিল করে অন্যত্র স্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও করপোরেশনের মেয়র, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কাছে দাবি জানানো হয় সমাবেশে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, বর্তমান সরকারের উন্নয়নের বিরোধী কেউ নন। কিন্তু যে উন্নয়ন মুষ্টিমেয় কিছু লোকের সুবিধা করে, বেশির ভাগ মানুষের জন্য ক্ষতিকর তার বিরোধী তারা। প্রধানমন্ত্রীও মানুষের ক্ষতি হয় এমন কোনো উন্নয়নে বিশ্বাসী নন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!