পৌনে ১৮ লাখ ইয়াবা ও ১ কোটি ৭১ লাখ টাকাসহ পাঁচ পাচারকারী ধরা

কক্সবাজারে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১৭ লাখ ৭৫ হাজার ইয়াবা ও নগদ ১ কোটি ৭০ লাখ ৬৩ হাজার টাকাসহ পাঁচ মাদক পাচারকারীকে আটক করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজার জেলা পুলিশ দিনব্যাপী এ অভিযান চালায়।

পুলিশের তথ্যমতে, মঙ্গলবার দুপুরে কক্সবাজার সদরের চৌফলদন্ডী ব্রিজের কাছাকাছি একটি ফ্রিশিং ট্রলার থেকে সাত বস্তা ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। সেখানে ইয়াবার পরিমাণ ছিল ১৪ লাখ। এ সময় আটক করা হয় মাদক পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যকেও।

আটক ৫ জন হলো-কক্সবাজার শহরের উত্তর নুনিয়ার ছড়ার নজরুল ইসলাম ও সাবেক মহিলা মেম্বার রাজুর ছেলে ইয়াবা গডফাদার মো. জহিরুল ইসলাম ফারুক, তার অন্যতম সহযোগি একই এলাকার মোজাফ্ফরের ছেলে বাবু, ফারুকের চাচা শ্বশুর ছৈয়দ আলম, তার স্ত্রী ও তার এক শালা। এই দুজনের নাম জানা যায়নি।

তাদের আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে বিকেল ৫টায় ইয়াবা পাচারের মূলহোতা শহরের নুনিয়ারছড়ার ফারুকের বাড়ি থেকে দুই বস্তা নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার টাকার পরিমাণ ১ কোটি ৭০ লাখ ৬৩ হাজার টাকা।

কক্সবাজার জেলা পুলিশের মতে, পুলিশের অভিযানে ইয়াবার বৃহৎ চালান আটকের ঘটনা এটি।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান। তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে ডিবি পুলিশকে সাথে নিয়ে পৃথক কয়েকটি টিম করে এই অভিযান চালানো হয়। অভিযানে একটি ফিশিং ট্রলার থেকে ইয়াবা ভর্তি সাতটি বস্তা উদ্ধার করা হয়। প্রতিটি বস্তায় ২৫ থেকে ৩০ কার্টুন ইয়াবা পাওয়া গেছে। যার পরিমাণ ১৪ লাখ পিস।

তিনি বলেন, আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, আটকরা মিয়ানমার থেকে বিশাল একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এই মরণ নেশা ইয়াবা এদেশে নিয়ে আসছিল। পরে তাদেরকে পুলিশি হেফাজতে রেখে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে ইয়াবা পাচারের মূলহোতা ইয়াবা গডফাদার জহিরুল ইসলাম ফারুক তার বাসায় ইয়াবা বিক্রির বিশাল অংকের টাকা মজুদ রাখার তথ্য প্রকাশ করে। তার তথ্যের ভিত্তিতে পুনরায় অভিযান চালিয়ে নগদ ১ কোটি ৭০ লাখ ৬৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ সুপার জানান, এটি একটি মাদক পাচারের বিশাল সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটটি দীর্ঘদিন ধরে মাদক পাচারের সাথে জড়িত থাকলেও আইনের আওতায় আসেনি। সর্বশেষ মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুজনকে আটক করা হয়। পাশাপাশি তাদের সিন্ডিকেটে আরও কারা আছে তা শনাক্তের কাজ চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, সোমবার রাত থেকে গোপন সংবাদে খবর পেয়ে ইয়াবা পাচারকারী চক্রটিকে আটকের জন্য অভিযানে নামে পুলিশ। জেলা পুলিশের এসপিসহ সিনিয়র কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় সদর উপজেলার চৌফলদন্ডী নদীর তীর থেকে এসপির নেতৃত্বে থাকা টিমটি এই বিশাল ইয়াবার চালান আটক করতে সক্ষম হয়। পরে আটক ফারুকের স্বীকারোক্তি মতে, তার বাড়ি থেকে নগদ এক কোটি ৭০ লাখ ৬৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরো জানান, এই ইয়াবা সিন্ডিকেটে যারা জড়িত রয়েছে তাদের সকলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি অভিযান শেষে তাদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা রেকর্ড করে আদালতে পাঠানো হবে।

এদিকে সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত আটক ফারুকের চাচা শ্বশুর ছৈয়দ আলমের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আরও ৩ লাখ ৭৫ হাজার ইয়াবাসহ ছৈয়দ আলমের স্ত্রীকে আটক করে জেলা পুলিশ।

এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!