নোংরা পরিবেশে পশু জবাই, দুর্গন্ধে পথ চলাই দায়

চট্টগ্রামের আনোয়ারা চাতরী চৌমুহনী বাজারের দক্ষিণে খানদরিয়া খালের পাশেই জরাজীর্ণ পশু জবাইখানা। এখানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে প্রতিদিন জবাই করা হচ্ছে পশু। মাসের পর মাস পড়ে থাকা পশুর বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে খালের পানি ও এলাকার পরিবেশ।

উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ বাজার চাতরী চৌমুহনী। বছরের পর বছর লাখ লাখ টাকা ইজারা হলেও উপজেলা প্রশাসন নির্মাণ করেনি স্বাস্থ্যসম্মত পশু জবাইখানা। পুরানো জবাইখানাটি সড়কের পাশে হওয়ায় অল্প বৃষ্টিতে ময়লা দুর্গন্ধে চলাফেরা করা কষ্টকর। তাছাড়া জবাইখানার ময়লা খালের পানিতে মিশে আরও বেশি দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

সোমবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আনোয়ারা, বাঁশখালী, চন্দনাইশ, পেকুয়াসহ কক্সবাজার জেলার হাজারো মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম পিএবি সড়ক। কাঁচা বাজারের দক্ষিণে খানদরিয়া খালের গা ঘেঁষে টিনসিটে নির্মিত হয়েছে এই জবাইখানা। জরাজীর্ণ জবাইখানার ময়লার দুর্গন্ধে এলাকার পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে।

নোংরা পরিবেশে পশু জবাই, দুর্গন্ধে পথ চলাই দায় 1

অভিযোগ রয়েছে, জবাইখানায় জবাই করা পশুর বর্জ্য, রক্ত, নাড়িভুঁড়ি ফেলে রাখে কসাইরা। ফলে সঠিক ব্যবস্থাপনা ও সচেতনতার অভাবে মারাত্মকভাবে পরিবেশ বিপর্যয়সহ জনস্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এছাড়া পর্যাপ্ত পানি দিয়ে ময়লা, আবর্জনা পরিষ্কার না করায় মশা, মাছি ও বিভিন্ন পোকা মাকড়ের বংশ বিস্তার ঘটছে। গাড়ি বা পায়ে হেঁটে এই পথ দিয়ে চলাচলে নাকে রুমাল চাপা দিতে হয়। এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে প্রতিদিন জবাই করা হচ্ছে পশু।

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ আনোয়ার বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা দেখছি ভাঙ্গা ও জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে জবাইখানা। সেখানে প্রতিদিন সকালে ৪-৫টি পশু জবাই হচ্ছে। আর দুপুর হলে জবাই করা পশুর বর্জ্যের দুর্গন্ধে ভারি হয়ে উঠে এলাকার পরিবেশ। বাজে পরিবেশে জবাই করা পশুর মাংস বাজার থেকে আমাদের কিনে খেতে হয়। তাছাড়া গাড়ি বা পায়ে হেঁটে এ পথ দিয়ে যাওয়ার সময় নাক বন্ধ করে যেতে হয়।’

চাতরী চৌমুহনী বাজারের মাংস ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মনছুর বলেন, ‘এত বড় বাজার, কিন্তু ছোট্ট একটি জবাইখানা। তাও দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় ভেঙে পড়েছে। নেই কোন পানির ব্যবস্থা। পশু জবাইয়ের পর অনেক কষ্ট করে পানি নিয়ে যেতে হয় পরিষ্কার করার জন্য। উপজেলা প্রশাসন জবাইখানাটি সংস্কার বা পুনর্নিমাণ করে দিলে আমরা উপকৃত হতাম।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘এখানে দেখেছি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পশু জবাই হচ্ছে। কসাইদেরকে অনেকবার বলার পরও তারা মানছে না। কয়েকবার মোবাইল কোর্টও করা হয়েছে। বাজারের পশু জবাইয়ের স্থানটিও ভেঙ্গে পড়েছে। এটি দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জোবায়ের আহমেদ জবাইখানাটি দেখে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।

এসএ/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!