নেতার পদত্যাগ-নাটক নিয়ে পাহাড়তলী বিএনপিতে অস্বস্তি চরমে

বিএনপি থেকে পদত্যাগের কথা জানিয়ে গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচারের ছয় মাস পরও স্বপদে বহাল রয়েছেন বাবুল হক হাজী। তিনি নগরের পাহাড়তলী থানা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। পদত্যাগের পরও কমিটির কার্যক্রমে সভাপতির পদে দেখানো হচ্ছে তার নাম। কয়েকদিন ধরে ফেসবুকে বাবুলকে স্বপদে বহালে অভিনন্দন জানিয়ে পোস্ট দিচ্ছে তার সমর্থকরা।

তবে বাবুল হকের স্বপদে থাকা নিয়ে নগর বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যেও রয়েছে ভিন্নতা। এ নিয়ে থানা বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ। তাদের অনেকের অভিযোগ, সুবিধাবাদী নেতাদের মধ্যে বাবুল হক অন্যতম। দলের দুঃসময়ে তিনি নিজেকে বাঁচাতে ব্যস্ত থাকেন। এর অংশ হিসেবেই এই পদত্যাগের নাটক।

জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী আন্দোলনে গোপনে সক্রিয় ছিলেন পাহাড়তলী থানা বিএনপির সভাপতি বাবুল হক। কিন্তু পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে গোপনে আঁতাত থাকায় নাশকতার বিভিন্ন মামলা থেকে নিজেকে আড়াল করেন। অথচ ওই সময়ে থানা বিএনপির অন্তত হাজারখানেক নেতাকর্মী নাশকতাসহ একাধিক মামলায় আসামি হয়ে এখনও এলাকা ছাড়া। এসব মামলার কোনটাতেই আসামির তালিকায় নাম নেই বাবুল হক হাজীর।

হঠাৎ গত ফেব্রুয়ারিতে চট্টগ্রামের স্থানীয় দৈনিকে ‌‘পাহাড়তলী থানা বিএনপির কমিটি থেকে অবসর গ্রহণ’ শিরোনামে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন বাবুল। এতে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে তিনি পাহাড়তলী থানা বিএনপির সভাপতি হিসেবে সম্পৃক্ত ছিলেন। কিন্তু অসুস্থতার কারণে দলগত কোন কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারছেন না। এ বিষয়ে অপারগতা প্রকাশ করে নগর বিএনপির সভাপতিকে পত্র দিয়ে ২ ফেব্রুয়ারি থেকে অবসর গ্রহণ করেন এবং ওইদিন থেকে থানা বিএনপির কমিটি ও দলের সঙ্গে কোন ধরনের সম্পৃক্ততা নেই। এরপর থেকে প্রকাশ্য রাজনীতিতে না থাকলেও গোপনে সক্রিয় ছিলেন বলে জানা গেছে।

পদত্যাগ ও স্বপদে বহাল বিষয়ে জানতে বাবুল হক হাজীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করেননি।

পাহাড়তলী থানা বিএনপির এক জ্যেষ্ঠ নেতা প্রকাশ না করার শর্তে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘যে ব্যক্তি মামলার হাত থেকে বাঁচতে দলের দুঃসময়ে হাজার হাজার নেতাকর্মীদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন, তাকে কিভাবে আবার নগর বিএনপি স্বপদে বহালের চিন্তা করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাবুল হককে স্বপদে বহাল রাখলে পাহাড়তলী থানা বিএনপির অনেক নেতাকর্মী গণপদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেবে।’

এ বিষয়ে নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম বক্কর চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘বাবুল হক গঠনতন্ত্র অনুযায়ী মহানগর বিএনপিকে অব্যাহতির কোন প্রকার চিঠি দেননি। এছাড়া তিনি পুনরায় রাজনীতি করার ইচ্ছে প্রকাশ করে চিঠি দিয়েছেন। তাই তাকে দলীয় স্বার্থে পুনরায় রাজনীতি করতে স্বপদে বহাল রেখেছি।’

তবে নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, ‘বাবুল হকের বিষয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য প্রসঙ্গে বলেন, তিনি হয়তো দলীয় বিশৃঙ্খলা এড়াতে বাবুল হককে স্বপদে বহালের কথা বলেছেন। তবে সত্যটা হলো এখনও এ বিষয়ে নগর বিএনপি কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি।’

জে শুভ/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!