চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর কালুরঘাট সেতুতে আটকে পড়ে শিশুটি তখন জীবনমৃত্যুর শঙ্কায়। কিন্তু কালুরঘাট সেতুতে তখন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে গাড়ি চলাচল। কারণ স্থানীয় সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমদ গাড়ি করে সেতু পার হবেন। তিনি না আসা পর্যন্ত গাড়ি চলবে না— এই সিদ্ধান্ত সেতু কর্তৃপক্ষের।
সকাল সাড়ে ১০টার সেই সময়ে গরম পানিতে ঝলসে যাওয়া দগ্ধ সেই শিশুর স্বজনের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে সেতু এলাকা। ভীড়ও জমে গেছে শত শত মানুষের। কিন্তু এসব ‘ছাইপাশ’ দেখার সময় নেই সেতু কর্তৃপক্ষের।
শিশুটির পরিবার ও আশেপাশের মানুষের কাতর অনুরোধেও মন গলানো যায়নি। দগ্ধ শিশুর সিএনজিচালিত ট্যাক্সিটি কালুরঘাট সেতুর টোল অফিসের সামনে আটকেই থাকে। দগ্ধ শিশুটির অসহনীয় যন্ত্রণা আর সেই দৃশ্য দেখে পথচারীদের অশ্রুজল একাকার হয়ে ওঠে।
শেষ পর্যন্ত এক ঘন্টারও বেশি সময় পর ১১.৪৫ মিনিটে বোয়ালখালী থানা পুলিশের প্রটৌকল নিয়ে কালুরঘাট সেতু পার হলে পূর্ব পাড় থেকে লাইন চালু হয়।
জানা গেছে, বোয়ালখালী পৌরসভার পূর্ব গোমদন্ডী মীরপাড়ার এনামুল হকের ৬ বছরের শিশুকন্যা তানজিনা হকের পুরো শরীর ঝলসে যায় গরম পানির পাত্রে পড়ে। সকাল ১০টার দিকে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হলে আশংকাজনক অবস্থায় কর্তব্যরত চিকিৎসক চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন।
বাবা এনামুল হক মেয়েকে বাঁচাতে সিএনজিচালিত ট্যাক্সিতে চমেক হাসপাতালের দিকে ছুটতে থাকেন। কিন্তু কালুরঘাট সেতুতে পৌঁছে গিয়ে দেখেন এমপি মোছলেম যাবেন বলে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সকাল ১১.৪৫ মিনিটে সাংসদ মোছলেম উদ্দীন আহমদ কালুরঘাট সেতু পার হওয়ার পর সেতুতে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হয়।