ডা. আকাশের আত্মহত্যার ঘটনায় স্ত্রীর বন্ধুও এবার কারাগারে

চট্টগ্রামের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক মোস্তফা মোরশেদ আকাশের আত্মহত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তার স্ত্রী ডা. তানজিলা হক চৌধুরী মিতুর কথিত বন্ধু ডা. মাহবুব আলমকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

সোমবার (১৬ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম দ্বিতীয় যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ মুহাম্মদ ছালমত উল্লাহ শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী ওয়াহিদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, দীর্ঘ চার বছর পর পলাতক থাকা ডা. মাহবুব আলম আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৩১ জানুয়ারি নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বাসায় নিজের শরীরে নিজেই ইনজেকশন পুশ করে আত্মহত্যা করেন চিকিৎসক আকাশ।

আত্মহত্যার আগে নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি স্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক’ ও ‘প্রতারণার’ অভিযোগ করে যান। মৃত্যুর আগে ডা. আকাশ নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, ‘ভালো থেকো, আমার ভালোবাসা (মিতু) তোমার প্রেমিকদের নিয়ে…।’ এর প্রমাণ হিসেবে মিতুর সঙ্গে তার বন্ধুদের বেশ কিছু ছবিও তিনি আপলোড করেন।

সেদিন রাতেই নন্দনকানন এলাকায় মামাত ভাইয়ের বাসা থেকে মিতুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন ১ ফেব্রুয়ারি ডা. আকাশের মা জোবেদা খানম বাদী হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে ছয় জনকে আসামি করে চান্দগাঁও থানায় মামলা করেন। এ মামলায় মিতুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

ডা. আকাশ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের অ্যানেস্থেসিয়া বিভাগের চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি চন্দনাইশ উপজেলার বাংলাবাজার বরকল এলাকার মৃত আবদুস সবুরের ছেলে। নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকায় থাকতেন।

আকাশের পরিবারের অভিযোগ এবং ঘটনার তদন্তে গ্রেপ্তারের পর মিতুর স্বীকারোক্তি জানান, ২০০৯ সাল থেকেই তানজিলা হক মিতুর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল ডা. মোস্তফা মোরশেদ আকাশের।

দীর্ঘ প্রেমের ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালে পারিবারিকভাবেই বিয়ে হয় মিতু ও আকাশের। বিয়ের পর উচ্চতর পড়াশোনার জন্য ইউএসএ চলে যায় মিতু। ইউএসএ থেকেই মিতুর সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত একাধিক সম্পর্ক নিয়ে ডা. আকাশের দাম্পত্য কলহ চলছিল।

২০১৯ সালের ১৩ জানুয়ারি মিতু দেশে ফিরে আসলে তাদের দুজনের মধ্যে দাম্পত্য কলহ আরও প্রকট হয়ে ওঠে। ঘটনার দিন রাতে আকাশের চাঁদগাও আবাসিক এলাকার বাসায় মিতু ও আকাশের মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয়। ওই সময় আকাশের বাসায় মিতুর একটি ভিডিও ধারণ করা হয়। যে ভিডিওতে মিতু তার একাধিক বন্ধুর সাথে অনৈতিক সম্পর্কের কথা স্বীকার করে।

সেদিন স্ত্রীর বেপরোয়া জীবনের বিভিন্ন দিক উল্লেখ করে তার নিজের ফেসবুক ওয়ালে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করেন আকাশ।

এদিকে তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ১০ সেপ্টেম্বর পাঁচ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। তারা হলেন, তানজিলা হক চৌধুরী মিতু, তার (মিতুর) মা শামীমা শেলী, বাবা আনিসুল হক চৌধুরী, ছোট বোন সানজিলা হক চৌধুরী আলিশা এবং মিতুর কথিত বন্ধু ডা. মাহবুবুল আলম।

আরএস/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!