চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে ফ্রি ট্রলি নিয়ে চাঁদাবাজি প্রতিদিন

চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীদের ব্যবহার করার ট্রলি অবৈধ টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে আবদুল মান্নান নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। তিনি রেলওয়ে স্টেশন পরিষ্কারের চুক্তিভুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিসিলন কোম্পানির সুপারভাইজার। অথচ এসব ট্রলি যাত্রীদের ফ্রি ব্যবহারের জন্য। কিন্তু ওই সুপারভাইজার শিকল দিয়ে ট্রলিগুলো বেঁধে রাখেন বলে জানা গেছে। এছাড়া কোনো কুলি ট্রলিপ্রতি ৫০ টাকা দিলে তবেই খুলে দেওয়া হয় ট্রলির তালা।

এর ফলে কুলিরা যাত্রীদের কাছ থেকে ইচ্ছেমতো টাকা আদায় করে নিচ্ছে। আর কুলিদের টাকা না দিলে প্লাটফর্ম থেকে বড় লাগেজ ও ব্যাগ নিয়ে স্টেশন থেকে বের হতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। আর ট্রলি থেকে ‘চাঁদাবাজি’ করে সুপারভাইজার আবদুল মান্নান মাসে প্রায় ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর আগেও মান্নানের বিরুদ্ধে টিকিট কালোবাজারি, দোকান নির্মাণসহ বিভিন্ন অনিয়মে জড়িত থাকার অভিযোগ থাকলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের যাত্রীদের মালামাল বহনের সুবিধার জন্য সিসিলন কোম্পানি ৪০টি ফ্রি ট্রলি দেয়। কিন্তু ট্রলিগুলো যাত্রীদের কোনো কাজে আসছে না। এসব ট্রলিগুলো কুলিরা দখল করে রেখেছে। তবে এর পেছনে নাটের গুরু সিসিলন কোম্পানির সুপারভাইজার মান্নান। তিনি শিকল দিয়ে তালা মেরে রেখেছেন ট্রলিগুলোতে। কোনো কুলি যদি ৫০ টাকা দেন তাহলে তাকে একটি ট্রলি দেওয়া হয় ব্যবহারের জন্য। যাত্রীরা এসব ট্রলি ফ্রি ব্যবহারের বিষয়টি জানেনই না। এরফলে ট্রলি না পেলে যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়।

বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, চট্টগ্রাম রেল স্টেশনের যাত্রীদের ফ্রি ব্যবহারের জন্য দেওয়া ট্রলিগুলো শিকল দিয়ে তালাবদ্ধ। এ সময় যাত্রীদের ব্যবহারের ট্রলি আপনার হাতে কেন—জানতে চাইলে কৃষ্ণ (৩৫) নামের এক কুলি বলেন, ‘আমরা সিসিলন কোম্পানির সুপারভাইজার মান্নানকে ট্রলিপ্রতি দৈনিক ৫০ টাকা করে দিই।’

তবে টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে সিসিলন কোম্পানির সুপারভাইজার আবদুল মান্নান বলেন, ‘যাত্রীরা নিজ দায়িত্বে ট্রলি ব্যবহার করবে। যদি কোনো যাত্রীর কুলির দরকার হয়, তিনি শুধু সেই কুলিকে টাকা দেবেন।’

রেলের ট্রলি আপনি কেন তদারকি করছেন—জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম রেল স্টেশন ম্যানেজার রতন কুমার চৌধুরী বলেন, ‘এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবো।’

চট্টগ্রাম রেলওয়ের জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাজিম উদ্দীনের কাছে ট্রলির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ট্রলিগুলোর বিষয়ে আমি জানি না। এ বিষয়ে জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!