চট্টগ্রামে নয়, বাবুল-মিতুর ছেলেদের জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশই যাবে মাগুরা

সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের দুই শিশু সন্তানকে চট্টগ্রামে পিবিআই কার্যালয়ে হাজির হওয়ার পরিবর্তে মাগুরা জেলা সমাজকল্যাণ কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বিধিনিষেধের কারণে সমাজসেবা কার্যালয় বন্ধ থাকলে মাগুরা সদর থানায় গিয়ে শিশু আইন কঠোরভাবে অনুসরণ করে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মিতু হত্যামামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন শিশু আদালত।

বুধবার (৩০ জুন) শিশু আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ ফেরদৌস আরা এ আদেশ দিয়েছেন।

বাবুল আক্তারের দুই সন্তানের মধ্যে ছেলের নাম আক্তার মাহমুদ মাহী ও মেয়ের নাম তাবাচ্ছুম।

চট্টগ্রামে নয়, বাবুল-মিতুর ছেলেদের জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশই যাবে মাগুরা 1

তাদের মা মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় বাবুল গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে তারা দাদা আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া ও চাচা হাবিবুর রহমান লাবুর হেফাজতে আছেন। এই মামলায় মিতু ও বাবুলের দুই সন্তানকে কয়েকদফায় জিজ্ঞাসাবাদের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রাম মহানগরের পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা।

তাদের চট্টগ্রাম পিবিআই কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত ১৩ জুন চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতে আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমা। আদালত তাদের ১৫ দিনের মধ্যে হাজিরের জন্য বাবুল আক্তারের বাবা ও ভাইকে নির্দেশ দেন।

আদালতের সেই আদেশের পর করোনা মহামারি ও বিধিনিষেধের কারণে বাবুল আক্তারের দুই সন্তানকে চট্টগ্রামে হাজিরে অপারগতার কথা উল্লেখ করে এবং শিশু আইন অনুসারে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশনা চেয়ে গত ২৮ জুন হাবিবুর রহমান লাবু চট্টগ্রামের মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে আবেদন করেন। পরে তা শুনানির জন্য শিশু আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এ পাঠানো হয়।

বুধবার এ আবেদনের ওপর আদালতের পূর্ণাঙ্গ শুনানি হয়েছে। শুনানীতে লাবুর আইনজীবী হিসেবে অংশ নেন এডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী। শুনানি শেষে শিশু আইন, ২০১৩ এর ৫৪ (৩) ধারা অনুযায়ী আদেশ দিলেন আদালত।

লাবুর আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী জানান, শুনানির পর আদালত আদেশে বলেছেন দুই শিশুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের বাড়ি মাগুরা জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কার্যালয়কে উপযুক্ত স্থান হিসেবে নির্ধারণ করাকে যৌক্তিক বিবেচনা করেছেন আদালত। তবে বিধিনিষেধের কারণে সরকারি এই অফিস বন্ধ থাকলে মাগুরা জেলার সদর থানাকে বিকল্প স্থান হিসেবে নির্ধারণ করতেও বলেছেন আদালত।’

জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিজের সুবিধামতো জিজ্ঞাসাবাদের সময় নির্ধারণ করতে পারবেন জানিয়ে ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, ‘আদালত জিজ্ঞাসাবাদের সময় নির্ধারনের জন্য তদন্ত কর্মকর্তাকে সুযোগ দিয়েছেন। তিনি সুবিধামত জিজ্ঞাসাবাদের সময় নির্ধারণ করতে পারবেন। তবে যে তারিখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে তার কমপক্ষে তিন দিন আগে শিশুদের হেফাজতকারী তার দাদা অথবা চাচাকে নোটিশ অথবা অন্য কোনো আইনগত মাধ্যমে বিষয়টি অবগত করতে হবে। অবগত হওয়ার পর দুই শিশুর দাদা ও চাচা তাদের হাজির করতে বাধ্য থাকবেন।’

তিনি বলেন, ‘অন্যথায় তারা আদালতের নির্দেশ অমান্য করেছেন মর্মে গণ্য হবেন এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। কিন্তু তদন্তকারী কর্মকর্তাকে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে শিশু আইন কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে বলে আদালত আদেশে উল্লেখ করেছেন।’

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!