চট্টগ্রামে করোনার নমুনা দিতেই হাজার ভোগান্তি, ভয়ে টেষ্টেও যাচ্ছে না মানুষ

চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্তের পাশাপাশি করোনা উপসর্গের রোগীও বাড়ছে ব্যাপক হারে। তবে এর সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে করোনা টেস্টের ভোগান্তিও। দিন দিন সক্ষমতা বাড়ার কথা থাকলেও চট্টগ্রামে ঘটেছে এর উল্টোটা। প্রথম দিকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হলেও এখন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সে সুযোগও।

ফলে ভোগান্তি বেড়েছে করোনা পরীক্ষায় ইচ্ছুক মানুষদের। আর এই ভোগান্তির ভয়ে উপসর্গ নিয়েও অনেক মানুষ টেস্ট না করিয়ে ঘরে বসে থাকছেন। ফলে বাড়ছে ঝুঁকি।

আবার নমুনা পরীক্ষার চেষ্টা করেও অনেকে নানামুখী ভোগান্তিতে পরে শেষে হাল ছেড়ে দেয়ার কথাও জানিয়েছেন। তেমনই একজন অভিজিৎ বণিক চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরেই হালকা জ্বর ও কাশি ছিল। এর মধ্যে হঠাৎ স্বাদ ঘ্রাণও পাচ্ছিলাম না। ভয় পেয়ে নমুনা পরীক্ষা করাতে চমেকে যাই। কিন্তু সেখানে সব খুলে বলার পর তারা আগে বাইরের ল্যাব থেকে তিনটি টেস্ট করাতে বললো। সেগুলোর ফলাফল পেলে করোনা টেস্ট করবে কিনা সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানালো। ওই সময়ে এই লম্বা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে আগ্রহ পাইনি। শেষে ইন্টারনেট ঘেটে আর পরিচিত এক ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করে উপসর্গ অনুযায়ী বাসায় চিকিৎসা নিতে শুরু করি।’

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে প্রথম দিকে বাসায় গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হলেও লোকবলের অভাবে তা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এখন। এর বদলে জেনারেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ও ফৌজদারহাটের বিশেষায়িত ল্যাব বিআইটিআইডিতে গিয়ে নমুনা জমা দিতে হয় আগ্রহীদের। তবে তিনটি স্থানেই প্রচুর ভিড় করে নমুনা দিতে হয়ে আগ্রহীদের। ফলে নমুনা দিতে গিয়েও আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি দেখা দিচ্ছে প্রবলভাবে। অন্যদিকে বাসা থেকে নমুনা সংগ্রহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বয়োবৃদ্ধ ও বেশি উপসর্গে ভোগা রোগীদের পড়তে হচ্ছে নতুন সংকটে।

করোনা টেস্টের ক্ষেত্রে নাগরিকদের এই দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডা. মোস্তফা খালেদ আহমদ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘দিন দিন সন্দেহভাজন রোগী যেভাবে বাড়ছে, আমাদের ক্যাপাসিটি কিন্তু সে হারে বাড়ছে না। এই কারণে নমুনা পরীক্ষা করাতে গিয়ে মানুষজনের একটা ভোগান্তি হচ্ছে— এটা ঠিক।’

তবে শীঘ্রই এই দুর্ভোগ কিছুটা হলেও কমে আসবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ব্র্যাক ও সিটি কর্পোরেশনের যৌথ ব্যবস্থাপনায় ছয়টি নমুনা সংগ্রহের বুথ চালু হওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। বুথগুলো চালু করে দিতে পারলে এই ভোগান্তি কিছুটা হলেও কমবে।’

খুব সহসাই বুথগুলো চালু করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা খুব সহসা চালু হবে। অনেকটা ফাইনাল স্টেজে আছে। এর মধ্যে পুরো স্ট্রাকচার প্রস্তুত করা হয়েছে। কিছু লজিস্টিকের কারণে চালু করা যাচ্ছে না। যেগুলো ঢাকা থেকে এর মধ্যে পাঠানো হয়েছে। আমাদের হাতে এসে পৌঁছেনি।’

তবে বাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহের বিষয়টি খুব শীঘ্রই আর চালু হওয়ার সম্ভাবনা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাড়ি বাড়ি গিয়ে নমুনা নেয়ার মত ওই জনবল এই মুহূর্তে আমাদের নেই। তাছাড়া তিন জায়গাতে লোকজন গিয়ে প্রতিদিন যে পরিমান নমুনা জমা দিচ্ছে সেগুলোর লোডও ঠিকঠাক মতো নেওয়া যাচ্ছে না। বিআইটিআইডিতে এখন প্রতিদিন ৩০০ লোক গিয়ে নমুনা দিচ্ছে। একই চিত্র চট্টগ্রাম মেডিকেলেও।’

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!