চট্টগ্রামে আরও ১০ মৃত্যু, দুহাজার ছুঁই ছুঁই মৃত্যুর ১০৫ জনই ত্রিশের নিচে

গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। এর ১০দিন পর দেশে প্রথম মৃত্যু হয় ১৮ মার্চ। এরপর থেকে লম্বাই হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। সেই সাথে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা শনাক্ত। সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে চট্টগ্রামের ১০জনসহ আরও ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটির সংক্রমণে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল এক হাজার ৯৬৮ জনে। এছাড়া একই সময়ে নতুন করে তিন হাজার ১১৪ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে সর্বমোট এক লাখ ৫৬ হাজার ৩৯১ জন ভাইরাসটিতে সংক্রমিত শনাক্ত হলেন। সবচেয়ে আশংকাজনক হচ্ছে এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করা দুহাজার ছুঁই ছুঁই করোনা রোগীর মধ্যে ১০৫ জনের বয়সই ত্রিশের কমে। তবে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত যারা মারা গেছেন তাদের তথ্য তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, এ পর্যন্ত যারা মারা গেছেন তাদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছর বয়সী ১২ জন মারা গেছেন, ১১ থেকে ২০ বছর ২৩ জন, ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী ৭০ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী ১৪৭ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী ২৯০ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী ৫৭১ জন, ৬১ বছরের বেশি বয়স্ক ৮৫৫ জন মারা গেছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন তাদের বিশ্লেষণ তুলে ধরে তিনি বলেন, মৃত ৪২ জনের মধ্যে ৩২ পুরুষ এবং ১০ জন নারী। তাদের বয়স বিশ্লেষণে জানানো হয়, মারা যাওয়াদের মধ্যে ১১ থেকে ২০ বছরের একজন, ২১ থেকে ৩০ বছরের তিনজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের একজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের পাঁচজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১১ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১১ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের সাতজন এবং ৮১ থেকে ৯০ বছরের বয়সসীমার তিনজন রয়েছেন।

শুক্রবার (৩ জুলাই) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন হেলথ বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।

২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ঢাকা বিভাগেরই বাসিন্দা রয়েছেন ১৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ১০ জন, রংপুর বিভাগে চারজন, খুলনা, রাজশাহী ও সিলেটে তিনজন করে এবং বরিশাল বিভাগে একজন মৃত্যুবরণ করেছেন। এদের মধ্যে হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ৩১ জন এবং বাড়িতে থেকে মারা গেছেন ১১ জন।

দেশের ৭১টি আরটি-পিসিআর ল্যাবের মধ্যে ৬৩টির পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস শনাক্তে ১৪ হাজার ৭৮১টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে পরীক্ষা করা হয়েছে ১৪ হাজার ৬৫০টি নমুনা। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়াল ৮ লাখ ১৭ হাজার ৩৪৭টিতে। দেশে নতুন করে আরো এক হাজার ৬০৬ জন করোনারোগী সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৬৮ হাজার ৪৮ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪৩ দশমিক ৫১ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২১ দশমিক ২৬ শতাংশ, এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশ। তবে শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ২৬ শতাংশ।

অন্যদিকে, ৩ জুলাই সিভিল সার্জনের দেয়া তথ্য মতে, চট্টগ্রাম জেলায় ২ জুলাই পর্যন্ত করোনা শনাক্তের সংখ্যা ৯ হাজার ৪০৫ জন। যাদের মধ্যে ৬ হাজার ৪৬৭ জন নগরের ও ২ হাজার ৯৩৮ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। একই সাথে উপজেলায় ৩ মৃত্যু নিয়ে চট্টগ্রামে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা এখন ১৮৭। একই সময়ে করোনাজয় করেছেন আরও ৪৭ জন। তাতে করে চট্টগ্রামে এই পর্যন্ত করোনা থেকে মুক্ত হয়েছেন ১১৩১ জন।

এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!