চট্টগ্রামের সন্তান নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার

চট্টগ্রামের সন্তান অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব কাজী হাবিবুল আউয়াল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) করে প্রথমবারের মতো আইন অনুযায়ী গঠিত হলো নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। নিয়োগ পাওয়া অন্য চার নির্বাচন কমিশনার হলেন– অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশিদা সুলতানা, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবীব খান, অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমান।

রাষ্ট্রপতি এই নিয়োগ দিয়েছেন বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে। সংবিধানের ১১৮(১) অনুচ্ছেদে দেয়া ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি এই নিয়োগ দিয়েছেন বলেও প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।

কাজী হাবিবুল আউয়াল অবিভক্ত আইন মন্ত্রণালয়, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও সংসদ সচিবালয়ে সচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন। সর্বশেষ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব হিসেবে ২০১৭ সালে অবসর নিয়েছিলেন তিনি। বিসিএসের ১৯৮১ ব্যাচের এই কর্মকর্তা সরকারি চাকরি থেকে বিদায় নেওয়ার পর ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করছিলেন।

নতুন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল চট্টগ্রামের দক্ষিণ সন্দ্বীপের কাজী পরিবারের সন্তান হলেও ১৯৫৫ সালে কুমিল্লা শহরে পিতার কর্মস্থলে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। খুলনার সেন্ট জোসেফস হাই স্কুল থেকে তিনি ১৯৭২ এসএসসি, ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৭৪ সালে এইচএসসি এবং অতঃপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৮ সালে আইন শাস্ত্রে এলএলবি (সম্মান) এবং ১৯৮০ সালে এলএলএম করেন।

পরে ১৯৮১ সালে তিনি বিচার কর্মবিভাগে মুন্সেফ (সহকারী জজ) পদে যোগদান করে জেলা ও দায়রা জজসহ বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন।

নিজের লেখা ‘জীবনের জলছাপ’ নামের একটি বইয়ে নতুন সিইসি কাজী আউয়াল লিখেছেন, ‘আমার জন্ম সন্দ্বীপে না হয়ে কুমিল্লায় হওয়ার পিছনে মূল কারণ ছিল আমার বাবার সরকারি কর্মস্থল। আমি যখন মাতৃগর্ভ থেকে পৃথিবীতে আসি তখন আমার বাবা কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে কর্মরত ছিলেন। সরকারি কর্মজীবী বাবার সন্তান হিসেবে আমাকে নিজের পূর্ব-পুরুষের ভিটার বদলে, শৈশব কাটাতে হয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। তাতে অবশ্য ভালোই হয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন জায়গায়, ভিন্ন ভিন্ন মানুষের, ভিন্ন ভিন্ন জীবনাচার ও সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হতে পেরেছি শৈশব থেকেই।’

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল এবং ব্যক্তি পর্যায় থেকে নাম নেওয়া ছাড়াও বিশিষ্টজনের সঙ্গে বৈঠক করে। গত মঙ্গলবারের (২২ ফেব্রুয়ারি) সভায় ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করে কমিটি। তাতে দেখা গেছে, সার্চ কমিটির কাছে যেসব নাম প্রস্তাব করা হয়েছে তাদের মধ্য থেকেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও পেশাজীবী সংগঠন সার্চ কমিটির কাছে যেসব নাম প্রস্তাব করেছে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে তা প্রকাশ করা হয়। ওই তালিকায় ৩২২ জনের নাম প্রকাশ করা হয়েছিল। এরপর আরও ডজনখানেক নাম সার্চ কমিটির কাছে জমা পড়েছিল বলে জানা গেছে।

তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের নাম রয়েছে ৪৯ নম্বরে। এছাড়া ৩২২ জনের তালিকার ২৬১ নম্বরে অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশিদা সুলতানা, ২৩৬ নম্বরে অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবিব খান, ১৫৪ নম্বরে অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব আলমগীর এবং ১৪৪ নম্বরে অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব আনিছুর রহমানের নাম রয়েছে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!