চট্টগ্রামের বিজয়মঞ্চে নারী সমাবেশ

জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন বলেছেন, ‘নারীর অংশগ্রহণ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। সরকার স্বীকৃতি দিলেও এখনও গণমানুষের মধ্যে আলোড়িত হয় না। আমাদের এই সমাজ ব্যবস্থায় নারীকে পণ্য বলে ভাবা হয়, তবে এই নারী সমাজ মঙ্গল, প্রগতি, অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামে সমানভাবে নিবেদিত আছেন। মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা নারী জাগরণে একটি অবলম্বন, আজ দেখতে পাচ্ছি বিজয়ের মাসে চট্টগ্রাম মহানগরীর সর্বাঞ্চলের নারীদের সমাবেশ। এটা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে।’

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের বিজয় মঞ্চে ৪র্থ দিনের অনুষ্ঠানে নারী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেছেন। তিনি আরও বলেন, ‘একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের বিজয় হলেও পরিপূর্ণ বিজয় হয়নি, যদি বিজয় হতো ৭৫ সাল থেকে এত রকম অঘটন হতো না। আমাদেরকে পিছিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেক অসাধ্য সাধন করেছেন। তার এ অভিযান বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তির পথযাত্রায় মুক্তিযুদ্ধের পূর্ণ বিজয় সম্পূর্ণ হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শহীদ ডা. আলীম চৌধুরীর কন্যা ডা. নুজহাত চৌধুরী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি প্রদীপ্ত মঞ্চ। চট্টগ্রাম থেকে এই বিজয় মেলার সূচনা সেটি আজ টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। আমার জীবন যাপনের শুদ্ধতম প্রেরণা এই জাতিকে বিশেষ করে নারী সমাজকে জাগরণের বার্তা শুনিয়ে যাবে। আমাদের সন্তানরা যে বিপথগামী না এবং তারা কখনোই স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তির সাথে হাত না মেলায় কারণ নতুন প্রজন্ম ধ্বংস করার জন্য নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে, এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন শেখ হাসিনা। আমি প্রত্যাশা করি আমাদের সন্তানরা হয়ে উঠুক একজন বঙ্গবন্ধু, একজন শেখ হাসিনা।’

সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নারী নেত্রী হাসিনা মহিউদ্দিন বলেছেন, ‘নারীর ক্ষমতায়ন শুধু পদ-পদবি নিয়ে নয়, তাদের মতামত ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সামাজিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। বিজয়ের মাসে একটি শুভ বার্তা মিয়ানমারে রাখাইন প্রদেশে মুসলিম জনগোষ্ঠী নির্মূলে যে গণহত্যা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে যে জনমত তৈরি হয়েছে তার পক্ষে গাম্বিয়ার মতো একটি ছোট দেশ বাদি হয়ে যে মামলা দায়ের করেছেন, তার সফল পরিসমাপ্তি চাই। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধসহ পৃথিবীর সকল মুক্তির আন্দোলনে নারী শক্তির যে উদ্দীপনা তৈরি করেছিলেন তার রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রত্যাশা করি। নারী সমাবেশ একটি সামাজিক জাগরণের মাইল ফলক।

নীলু নাগের সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুছ, লতিফা আনসারী রুনা, মালেকা চৌধুরী, হোসনে আরা বেগম, নুরে আরা বিউটি, শারমিন ফারুক, ফারজানা মুন্নি, হোসনে আরা পারু, কান্তা ইসলাম মিনু, জোহেরা বেগম, আফরোজা কালাম, আবিদা আজাদ, জেসমিন পারভীন জেসি, তাসলিম নাসরীন রুবি, আফরোজা, পাপিয়া সুলতানা শাহিন, মনীষা সেন, আয়েশা আলম, সোনিয়া ইদ্রিস, শিউলী দে, রুমকী সেন, চেমন আরা, লাইলী আক্তার এটলী, ইসরাত, ইসরাত জাহান।

বিজয় মঞ্চে শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে স্মরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। মুখ্য আলোচক থাকবেন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. অনুপম সেন, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শিরিন আখতার, চট্টগ্রাম ভেটারিনারি ও অ্যানিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গৌতম বুদ্ধ দাশ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, সাংবাদিক শ্যামল দত্ত।

সিএম/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!