চট্টগ্রামের প্রবাসী অসুস্থ হওয়ার পর পরিবার আর তাকে চায় না

পরিবারে সচ্ছলতা ফেরানোর আশায় ১০ বছর আগে গিয়েছিলেন প্রবাসে। কাজ করে যা আয় করতেন সবই পাঠাতেন পরিবারের কাছে। প্রবাসে একদিন হঠাৎ স্ট্রোক করে শয্যাশায়ী হওয়ার পর পুরো পরিবারই তার কাছ থেকে দূরে সরে গেল। সহকর্মীরা ফোনে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোন ধরতো না কেউ।

এমনই দুর্ভাগা সাহজাদা হোসেন গত মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশি কমিউনিটি ও দূতাবাসের সহযোগিতায় মিশরের কায়রো থেকে দেশে ফিরলেন।

সাহজাদা হোসেন চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের মাইটভাঙ্গা গ্রামের সহিদ উল্লাহর ছেলে।

জানা গেছে, ২০১২ সালে সন্দ্বীপের বাসিন্দা সাহজাদা একটি পোশাক শিল্পপ্রতিষ্ঠানে কাজ নিয়ে মিশরের আওয়াল গামা শহরে যান। এর ছয় বছর পর ২০১৮ সালে ছুটিতে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে কয়েকদিন মাত্র ছিলেন। এরপর আবার ফিরে যান মিশরের কর্মস্থলে। সেখানে কাজ করে যা আয় করতেন, তার সবই পাঠিয়ে দিতেন পরিবারের কাছে।

গত বছরের আগস্টে হঠাৎ করে সাহজাদা হঠাৎ স্ট্রোক করেন। এরপর মিশরে তার বাংলাদেশি সহকর্মীরা তাকে ভর্তি করেন কায়রোর সৌদি-জার্মান হাসপাতালে।‌ সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ডাক্তাররা জানান, তার অস্ত্রোপচার করা জরুরি। আর এজন্য বড় অংকের অর্থের প্রয়োজন।

এমন অবস্থায় সহকর্মীরা বাংলাদেশে সাহজাদার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতি জানান।

উপায় না দেখে সহকর্মী আলাল উদ্দিন সাহজাদাকে নিয়ে যান তার বাসায়। এর কয়েকদিন পর সাহজাদা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। অসুস্থ হয়ে পড়ায় সাহজাদা কোনো কাজ আর করতে পারতেন না।

মিশরপ্রবাসী মাকসুদ আজহারী বলেন, ‘সাহজাদার পরিবারে স্ত্রী, ৩ মেয়ে ও মায়ের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করি তাকে দেশে পাঠাতে। কিন্তু তারা কোনো সহযোগিতা করেননি। এমনকি একপর্যায়ে ফোন করলেও তারা ধরতেন না।’

শেষ পর্যন্ত মিশরে মানবকল্যাণ গ্রুপের মাধ্যমে বাংলাদেশ কমিউনিটির সহযোগিতায় গত ৩১ জানুয়ারি কায়রো‌ বিমানবন্দর থেকে সৌদি এয়ারলাইন্সে সাহজাদাকে দেশে পাঠানো হয়।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!