বড় ভাই নাফিস এবার তামিমের জন্য টাকা বাঁচানোর ব্যাখ্যা দিলেন

বাংলাদেশ ক্রিকেটে চট্টগ্রামের বিখ্যাত ‘খান পরিবারের’ অবদান মোটামুটি সবারই জানা। জানা আছে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী খান পরিবার সম্পর্কেও। পারিবারিকভাবেই বেশ সচ্ছল তারা। সম্প্রতি আলোচনায় এসেছে তামিম ইকবালের জন্য বড় ভাই নাফিস ইকবালের টাকা বাঁচানোর একটি প্রসঙ্গ। যার ভুল ভাঙিয়ে দিলেন নাফিস নিজেই।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে থমকে গেছে জীবনযাপন। বন্ধ আছে সব ধরনের খেলাধুলা। এমন পরিস্থিতিতে বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন ক্রিকেটাররা। এটা ভেবেই ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ হাতে নিয়েছেন তামিম। তারকা ক্রিকেটারদের সাথে সরাসরি ভিডিও আড্ডা দিচ্ছেন তিনি। যেখানে সোমবার (৪ মে) তামিমের অতিথি হিসেবে ছিলেন সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।

আড্ডার এক ফাঁকে উঠে আসে তামিমের বড় ভাই নাফিসের প্রসঙ্গ। তিনি জাতীয় দলে একসময় মাশরাফির সতীর্থ ছিলেন। সেই হিসেবে বন্ধু নাফিসকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন মাশরাফি।

বড় ভাই নাফিস এবার তামিমের জন্য টাকা বাঁচানোর ব্যাখ্যা দিলেন 1

তামিমের উদ্দেশ্য করে নাফিসকে নিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘তোর এত দূর আসার পেছনে তোর ভাইয়ের অবদান সবচেয়ে বেশি। যে যাই বলুক, তোর ভাইকে আমি কাছ থেকে দেখেছি। তোর জন্য অবিশ্বাস্য ত্যাগ স্বীকার করেছে। ওয়ান পেন্স বার্গার খেত সে। আমি ওকে একদিন বললাম, শরীরকে না দিলে তুই বাঁচবি কিভাবে, আর খেলবিই বা কীভাবে? পরে বুঝেছি তোর জন্যই এসব করত। চাইতো তুই যেন একটা ভালো ব্যাট দিয়ে খেলতে পারিস।’

এই আড্ডার পর অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, সচ্ছল খান পরিবারে এতোটা অর্থকষ্ট থাকার কথাও না, যে তামিমকে গড়ে তুলতে টাকা বাঁচাতে হবে নাফিসকে। এই প্রসঙ্গে বিশদ জানিয়েছেন নাফিস। মাশরাফির বলা কথাটা নিছক মজা করেই বলা— মনে করেন তিনি। তামিমের জন্য নিজের আত্মত্যাগের পুরোটাই দায়িত্ব হিসেবে দেখেন নাফিস।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তামিমের প্রতি আমার যে আত্মত্যাগ, একটা ভাইয়ের একটা ভাইয়ের প্রতি যে আত্মত্যাগ থাকে আমার সেটা ছিল। আমার ভূমিকাটা একটু বেশিই ছিল। কারণ আমার বাবা আমাদের খুব ছোট বয়সে ছেড়ে চলে যান। তখন আমার বয়স ছিল ১৫ বছর, তামিমের দশ বছরের মত। তখন আমার আলাদা একটা দায়িত্ব ছিল।’

‘সেই সময় আমি খেলতাম। যা উপার্জন করতাম…। এটা সাধারণ একটা বিষয় আমার মনে হয়। আমার পরিবর্তে যেকোনো ভাই-ই এই কাজ করতো— যেটা আমি করেছি। তো কারও বাবা যদি মারা যায়, তার যদি ছোট ভাই থাকে, তো তিনি যেটা করতেন, আমি সেই কাজটাই করেছি।’ সাথে যোগ করেন তিনি।

তবে টাকা যে তিনি বাঁচানোর চেষ্টা করতেন না, তেমনটা নয়। এর কারণও ব্যাখ্যা করেছেন নাফিস, ‘তবে টাকা বাঁচানোর যে কথাটা বলেছে, সেই সময় টাকাপয়সা বাঁচানোর চিন্তাভাবনা ছিল আমার। আমাদের পরিবার ঐতিহ্যবাহী খান পরিবার। আমি বলবো না আমাদের পরিবার অসচ্ছল ছিল। তবে বাবা না থাকায় পরিবারের নিয়ন্ত্রণ চাচার হাতে ছিল। কিছু ক্ষেত্রে তো আপনি সবসময় গিয়ে চাইতে পারবেন না, আমাকে এটা দেন, আমাকে ওটা দেন!’

‘বাবার পর যদি কারও কাছে আবদার থাকে তাহলে সেটা বড় ভাইয়ের কাছে। তো সেই জায়গায় একটা দায়িত্ববোধ থাকে। খান পরিবার কখনোই অর্থনৈতিক সমস্যার মধ্যে দিয়ে যায়নি, তবে অনেক ক্ষেত্রে আমাদের ব্যক্তিগত কিছু জিনিস আমাদেরকেই দেখতে হতো। বাবা যখন ছিল তখন কিন্তু আমার এসব চিন্তা করতে হতো না।’

এমএহক/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!