বলা হল যা, চট্টগ্রাম বন্দরে পোশাক এলো তার দ্বিগুণ

৭০ লাখ টাকা শুল্ক ফাঁকির চেষ্টা

চট্টগ্রাম বন্দরে ঘোষণার চেয়ে দ্বিগুণের বেশি পোশাক সামগ্রী এলো দুবাই (সংযুক্ত আরব আমিরাত) থেকে। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকার চৌধুরী ট্রেডার্স ঘোষণার চেয়ে ১৩৪ শতাংশ বেশি পণ্য নিয়ে আসেন। পণ্য আমদানিতে ঘোষণা ছিল বালিশ কাভার, সালোয়ার, জামা, কামিজ, কাফতান, লং কুর্তি ইত্যাদি। কাস্টমস হাউস থেকে চালান ছাড়ের দায়িত্বে ছিল চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এলাকার ইউনি বাংলা লিমিটেড। এভাবে প্রায় ৭০ লাখ টাকা শুল্ক ফাঁকির চেষ্টা করেছিল আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ।

কাস্টমস সূত্র জানায়, ওই চালানে ৭ হাজার ৪১ কেজি ঘোষণায় অতিরিক্ত আরও ৯ হাজার ৪৬৯ কেজি পণ্য বেশি পাওয়া যায়। যা ঘোষণার তুলনায় ১৩৪ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে ঘোষণা বহির্ভূত মেন্স কুর্তা নামের ১৮৭ কেজির একটি প্যাকেটও পাওয়া যায়। বাকি পণ্য ঘোষণায় থাকলেও ওজনে দ্বিগুণের চেয়ে বেশি পাওয়া গেছে। ঘোষণা করা চালানে সন্দেহ থাকায় পণ্যটি শতভাগ কায়িক পরীক্ষায় এমন প্রতারণার সন্ধান পান চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের অডিট ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখার কর্মকর্তারা। বিষয়টি আরো তদন্ত শেষে সংশ্লিষ্ট আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ এজেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানালেন কাস্টমসের সহকারী কমিশনার।

জানা যায়, ৩ হাজার ৪০৪ ডলার দিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ৭ হাজার ৪১ কেজি বালিশ কাভার, কামিজ, জামা-কাফতান এসব আমদানির করার কথা ছিল। আমদানিকারক ঘোষণা দেওয়া পণ্য আনলেও পরিমাণে অতিরিক্ত রয়েছে দ্বিগুণের চেয়েও বেশি। এতে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭০ লাখ টাকা শুল্ক ফাঁকি হয়েছে বলে ধারণা করছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা।

বিল অফ এন্ট্রি থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি কাস্টমস হাউসে বিল অফ এন্ট্রি (সি নম্বর ২৭৯৩৫২) দাখিল করা হয়। আমদানিকারক ঢাকার মেসার্স চৌধুরী ট্রেডার্সের পক্ষে ওই চালান ছাড়ের জন্য বিল অফ এন্ট্রি দাখিল করে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের সিএন্ডএফ ইউনি বাংলা লিমিটেড। দুবাইয়ের তাসমিনা শাল ট্রেডিং লিমিটেড কোম্পানি থেকে এ পণ্যে আমদানি করা হয়। চালানটি ‘এমভি এক্সপ্রেস কোহিমা’ জাহাজে চট্টগ্রাম বন্দরে আসে।

আমদানিকারক কোম্পানি স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড থেকে (১৯১৮০১০১৩৯ নম্বর) এলসি করে। ১০ ফেব্রুয়ারি এআইআর শাখা কর্রিক কায়িক পরীক্ষার তারিখ থাকলেও মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) কায়িক পরীক্ষা করে। এতে অতিরিক্ত পণ্য নিয়ে আসার তথ্য পান কর্মকর্তারা।

২০১৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ওই চালানের বিল অফ এন্ট্রি দাখিলের পর সন্দেহ থাকায় চালানটি কাস্টমসের বিশেষায়িত সফটওয়্যার অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ডে ‘লক’ করে তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় কাস্টমস অঢিট ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিচার্জ (এআইআর) শাখাকে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাস্টমসের সহকারী কমিশনার নুর এ হাসনা সানজিদা অনসূয়া বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্য থাকায় চালানটি লক করা হয়েছিল। শতভাগ কায়িক পরীক্ষায় তা স্পষ্ট হলো। অনেক বড় জালিয়াতি করেছে আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ। এর জন্য জরিমানা গুণতে হবে। তবে অতিরিক্ত পাওয়া পণ্যের শুল্কও দিতে হবে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে।’

জড়িতদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫) অনুযায়ী মামলা দায়ের হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এএস/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!