আলীকদম ফয়জুল উলুম মাদ্রাসার পরিচালক শামশুল হুদা ও সালমা বেগমের পরিবারের বাকবিতণ্ডা ও মারামারির ঘটনায় সালমা বেগম বাদি হয়ে শামশুল হুদাসহ পাঁচ জন ও অজ্ঞাত দুই জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে পানি নেওয়াকে কেন্দ্র করে সালমা বেগমের পরিবার ও মাদ্রাসার পরিচালকের বাকবিতণ্ডা ও একপর্যায়ে মারামারির ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে সালমা বেগম বাদি হয়ে আলীকদম থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
মালমার এজাহারে বলা হয়েছে, ফয়জুল উলুম মাদ্রাসায় একটি রিংওয়েল আছে। যেখান থেকে প্রতিদিন এলাকাবাসী খাবার পানি নিয়ে যায়। সালমা বেগমের বাড়িতে টিউবওয়েল না থাকায় তার বড় ছেলে আলম মাদ্রাসা থেকে কলসি নিয়ে পানি আনতে গেলে পানি নিতে বাধা দেয়। এর প্রতিবাদ করলে মাদ্রাসার পরিচালক শামশুল হুদা মসজিদের ব্যবহৃত ঝাড়ু দিয়ে আলমকে ডান হাতে, ডান কানে ও পিঠে জখম করে এবং ধাক্কা দিয়ে মাদ্রাসার বের করে দেয়। সালমা বেগমের মেজ ছেলে রফিক তার বড় ভাইকে মারার কারণ জানতে চাইলে তাকেও আক্রমণ করে। শামশুল হুদার নির্দেশে অন্য আসামিরা রফিককে কিল-ঘুষি মেরে মাদ্রাসা থেকে বের করে দেয়। পরে সালমা বেগম ও তার মেয়ে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে তাদেরকেও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। আহতদের আলীকদম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফয়জুল উলুম মাদ্রাসার শিক্ষক তৌহিদ বলেন, ঘটনার সময় আমি অনুপস্থিত ছিলাম। পরে আলীকদম থানা থেকে এএসআই খালেদসহ কয়েকজন পুলিশ এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। দুই পক্ষকে থানা যেতে বলেন। সেখানে আলীকদম থানার ওসি রফিক উল্লাহ ঘরোয়াভাবে দুই পক্ষকে আলাদাভাবে বুঝিয়ে মীমাংসা করেন এবং আঘাতপ্রাপ্ত সালমা বেগম ও তার ছেলের চিকিৎসা, ওষুধসহ যাবতীয় খরচ বহন করার জন্য মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। আমি নিজে সে অনুযায়ী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাই এবং ওষুধপত্র কিনে দিই। পরে তারা বাড়ি চলে যান এবং দুপুরে জানতে পারি সালমা বেগম হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
আলীকদম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, সালমা বেগম লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগপত্রে ৫ জনসহ অজ্ঞাত দুজনকে আসামি করা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে তালিকাভুক্ত দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে বলে জানান তিনি।
মারামারির ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর শামশুল হুদা আত্মগোপনে চলে যান। পুলিশ অভিযান চালিয়ে মাদ্রাসার মাহামুদুল করিম, আলমগীর, শফিউল আলম ও শামশুল হুদার স্ত্রীকে আটক করলেও অভিযোগপত্রে নাম না থাকায় সকালে শামশুল হুদার স্ত্রী ও শফিউল আলমকে ছেড়ে দেওয়া হয়।