আমি সবজান্তা নই, ইশতেহারেও অবাস্তব কিছু দেইনি

সাংবাাদিকদের মুখোমুখি মেয়র রেজাউল

দায়িত্ব পালনকালে ভুল হলে তার সমালোচনার পাশাপাশি প্রতিকারের উপায় তুলে ধরার জন্য সাংবাদিকদের আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নব নির্বাচিত মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। এ সময় সবাইকে নিয়ে চট্টগ্রাম শহরে নতুন দিনের সূচনা করার প্রত্যাশার কথাও ব্যক্ত করেন নতুন মেয়র।

রোববার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব মন্তব্য করেন রেজাউল করিম চৌধুরী।

তিনি বলেন, আমি সবজান্তা নই, সবার পরামর্শ চাই। সম্মিলিত সিদ্ধান্তে ভুল হওয়ার আশঙ্কা নেই। আমি মেয়র হওয়া বড় কথা নয়, জনপ্রত্যাশা পূরণে সবার সহযোগিতা দরকার। ভুল হলে সাংবাদিকদের দেখিয়ে দিতে হবে। সমালোচনা অবশ্যই করবেন। পাশাপাশি সঠিক প্রতিকারও তুলে ধরতে হবে। চসিকের সমন্বয় সভায় জবাবদিহি থাকতে হবে৷ মেয়রের কর্তৃত্ব থাকতে হবে। আমরা সুন্দরভাবে শহরকে সাজাতে চাই।

তিনি আরও বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে জননেত্রী শেখ হাসিনা ৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প দিয়েছেন। অনেক প্রভাবশালী খাল দখল করেছেন। আমি শতভাগ দায়িত্ব পালন করবো নিরপেক্ষভাবে।

এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন বাবুল, কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, শফিকুল ইসলাম ফারুক, চন্দন ধর, নবনির্বাচিত কাউন্সিলর মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, মোহাম্মদ হোসেন, নিলু নাগ, হুরে আরা বিউটি, তসলিমা নুরজাহান রুবি, আনজুমান আরা, রুমকি সেন গুপ্ত, শাহীন আকতার রোজি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক নৈসর্গিক সৌন্দর্যে সংরক্ষণে কঠোর হবেন জানিয়ে নব নির্বাচিত মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, এ চট্টগ্রাম নিয়ে আমরা গর্ব করি। বৈপ্লবিক চট্টগ্রাম। নৈসর্গিক চট্টগ্রাম৷ চট্টগ্রামের ঐতিহ্য ফিরিয়ে নিতে হলে সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে। পাহাড় কেটে শেষ করে দিয়েছে। লোভী মানুষ সুন্দর ভূমিকে নস্যাৎ করে দিচ্ছে৷ জলাধার ভরাট হয়ে আবাসিক এলাকা হয়ে গেছে। এসব সংরক্ষণে বিশেষজ্ঞ নিয়ে ফিজিবিলিটি স্টাডি করতে হবে।

চট্টগ্রামের স্বাস্থ্যখাত নিয়ে কাজ করতে বিত্তবানদের পাশে চেয়ে তিনি বলেন, করোনার সূচনায় চট্টগ্রামে স্বাস্থ্যসেবা অসহায় হয়ে পড়েছিল। পিতার কোলে সন্তানের মরদেহ নিয়ে আহাজারি দেখেছি৷ আমি আইসোলেশন সেন্টার করেছিলাম। ফুটপাতের অসহায়দের জন্য আমি চিন্তা করেছি ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসাসেবা চালু করবো। বিত্তবানেরা এগিয়ে আসলে অনেক কিছু করা সম্ভব।

মাদক ও সন্ত্রাস দমনের পাশাপাশি খেলাধুলা এবং সাংষ্কৃতিক চর্চাকে পৃষ্ঠপোষকতা করবেন জানিয়ে মেয়র বলেন, আমি জীবনে সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দিইনি৷ আগামীতেও দেবো না। মাদক ব্যবসায়ীদের চোখ বন্ধ করে শায়েস্তা করতে চাই। সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যা মোকাবেলা করতে হবে আমি মেয়র হিসেবে করবো। যদি পারা যায় পরিত্যক্ত সরকারি জায়গায় শিশুদের খেলার মাঠ করবো। কিশোর গ্যাংকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। তাদের সৃজনশীলতা বিকাশে মুক্তমঞ্চ করতে চাই, সংস্কৃতিচর্চার সুযোগ তৈরি করতে চাই।

প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, গত ২৭ জানুয়ারি নির্বাচন হয়েছে। আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই, নেত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই। উনি আমাকে নৌকা প্রতীক দিয়েছেন। জনগণ শেখ হাসিনার উন্নয়নের ওপর আস্থা রেখেছেন। করোনা ভাইরাসের সময় যখন মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছিলেন পাশে দাঁড়িয়েছি। কল্যাণের জন্য রাজনীতি করেছি। কথা দিচ্ছি নীতি আদর্শ থেকে এক চুল পরিমাণ বিচ্যুত হবো না। অবাস্তব কিছু ইশতেহারে দিইনি।

সভাপতির বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস। বক্তব্য রাখেন সাবেক সভাপতি কলিম সরওয়ার, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম, ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন বাবুল, কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম, ধন্যবাদ বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সহসভাপতি সালাহউদ্দিন মো. রেজা।

ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সাংবাদিক এম নাসিরুল হক, জসিম চৌধুরী সবুজ, মোস্তাক আহমেদ, শামশুল হক হায়দারী, নির্মল চন্দ্র দাশ, আসিফ সিরাজ, ক্লাবের সহসভাপতি স ম ইব্রাহিম, কার্যনির্বাহী সদস্য মোয়াজ্জেমুল হক, শহীদুল্লাহ শাহরিয়ার, মনজুর কাদের, দেবদুলাল ভৌমিক প্রমুখ।

এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!