সিএনজি ট্যাক্সিতেই চট্টগ্রামের স্কুল শিক্ষার্থী নিখোঁজের সব রহস্য!

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদের নাতি নিখোঁজের আলোচনার মধ্যেই এবার স্কুলে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশে সাউথ পয়েন্ট স্কুলের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সাকিব সাহাব (১৫)। রোববার (১৬ জুন) সকালে নগরীর নাসিরাবাদের এই স্কুলের গেট থেকেই একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে নিখোঁজ হয় সে। এ ঘটনায় রোববার রাতেই নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন ওই শিক্ষার্থীর মামা আতাউর রহমান। জানা গেছে, থানা পুলিশের পাশাপাশি নিখোঁজ সাকিবের বিষয়টি তদন্ত করছে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটও।

পুলিশের ধারণা, নিজ থেকেই নিখোঁজ হয়েছে সাকিব। তবে কী কারণে তার নিখোঁজ সে রহস্যের জট খুলতে এখন খোঁজা হচ্ছে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে। কারণ যে সিএনজি অটোরিকশায় সাকিব স্কুল গেট থেকে নিরুদ্দেশ হয়েছে সেটার সন্ধান পাওয়া ছাড়া রহস্য উদঘাটন সম্ভব নয়। তবে এই ঘটনা নিখোঁজ নাকি অপহরণ সেটা বলতে পারছে না পরিবারের কেউ।

এই গেট থেকেই সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে চলে যায় সাকিব
এই গেট থেকেই সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে চলে যায় সাকিব

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সাকিব, সুমাইয়া ও তার ছোট ভাইকে নিয়ে প্রতিদিনের মত সকাল সাতটায় নগরীর মেহেদীবাগের বাসা থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে নাসিরাবাদে যান তার মা। নাসিরাবাদের সাউথ পয়েন্ট স্কুলে সুমাইয়া দশম শ্রেণীতে আর সাকিব নবম শ্রেণীতে পড়ে। আর এই সড়কের প্রায় ১০০ হাতের মধ্যে একই স্কুলের প্রাইমারি শাখায় পড়ে তাদের ছোট ভাই। প্রতিদিনের মত সাকিবদের মা সাউথপয়েন্ট স্কুলের সামনে সাকিব ও সুমাইয়াকে নামিয়ে দিয়ে অদূরেই অবস্থিত প্রাইমারি শাখায় ছোট ছেলেকে দিতে যান। এ সময় বড় বোন সুমাইয়া স্কুলে প্রবেশ করলেও সাকিব যে সিএনজি করে মেহেদীবাগ থেকে এসেছে সেই সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে চলে যায়। পরে স্কুল ছুটির পরও বোন ও মা সাকিবকে স্কুলে না পেয়ে সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজ করেন তারা।

পাঁচলাইশে সাউথ পয়েন্ট স্কুলে সাকিবের পরিচয়পত্র
পাঁচলাইশে সাউথ পয়েন্ট স্কুলে সাকিবের পরিচয়পত্র

সব জায়গায় সাকিবের খোঁজ না পেয়ে রাতে তার মামা আতাউর রহমান পাঁচলাইশ থানায় একটি জিডি করেন। এরপর পুলিশ এ ঘটনার তদন্তে নেমে প্রথমে স্কুল গেট ও আশপাশের সড়কের সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করেন। এসব পর্যালোচনা করার পাশাপাশি স্কুলের দারোয়ানসহ অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। এরপর তারা মোটামুটি ধারণা করছেন, এটি অপহরণ নয় আপাতত মনে হচ্ছে সাকিব নিজ থেকেই নিখোঁজ হয়েছে। এছাড়া তার হদিস ও সম্ভাব্য গতিপথ জানতে যে সিএনজি অটোরিকশায় করে গেছে সেটার নম্বরও প্লেট সংগ্রহ করে চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করার উদ্যোগও নিয়েছে পুলিশ।

সাকিবের মামা আতাউর রহমান বলেন, ‘সাকিব গত ছয় মাস আগে সৌদি আরব থেকে দেশে এসেছে। সে দেশে এসে জানুয়ারিতে সাউথ পয়েন্ট স্কুলের নবম শ্রেণীতে ভর্তি হয়। তার স্বভাব অত্যন্ত ভালো ও নম্র। সে কারও সঙ্গে তেমন মেশার সুযোগও পায়নি। সে বাংলা ভাষায় কথা বলতে খুব বেশি স্বচ্ছন্দ নয়। সাধারণত ইংরেজি ও আরবি ভাষায় সে কথা বলতো। তবে নিয়মিত নামাজ কালাম পড়তো। তার সঙ্গে কারও শত্রুতা থাকার কথাও নয়। কিন্তু কেন সে নিখোঁজ হলো বিষয়টি বোধগম্য নয়।’

জানতে চাইলে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূইয়া বলেন, ‘স্কুল ছাত্র নিখোঁজের ঘটনাটি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। স্কুল ও আশপাশের সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে তা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। আশা করি একটি সুরাহা করতে পারব। তবে এটি এখনো নিখোঁজ নাকি অপহরণ সেটাও নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।’

এডি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!