অর্থাভাবে মৃত্যুর পথে প্রয়াত শিল্পী শেফালী ঘোষের একমাত্র সন্তান সুকণ্ঠ

চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের সম্রাজ্ঞী প্রয়াত শেফালী ঘোষের একমাত্র সন্তান সুকণ্ঠ দত্ত ছোটন (৪২)এখন মৃত্যু পথযাত্রী। ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তিনি বর্তমানে রয়েল হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে। চিকিৎসকরা জানিয়েছে তার বেঁচে থাকার আশা ক্ষীণ। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে ইতোমধ্যে খরচ হয়েছে ৭ লক্ষ টাকা।চিকিৎসা চালিয়ে নিতে অনেক টাকা প্রয়োজন।চিকিৎসা ব্যয় চালিয়ে নেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে ঠেকেছে সুকণ্ঠের পরিবারের জন্য।

স্বামীর চিকিৎসা চালিয়ে নিতে সমাজের সব শ্রেণি পেশার মানুষকে আকুতি জানিয়েছেন সুকণ্ঠের স্ত্রী দ্বীপান্বিতা।

সুকণ্ঠের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সুকণ্ঠ দত্ত পঁচিশ দিন ধরে অসুস্থ। এরপর তাকে রয়েল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এখানকার ডাক্তার কিছু পরীক্ষা দিলে তারা সেগুলো করার জন্য ২৫ শে জুন তাকে ঢাকার গ্রীনলাইট হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করানো হয়। তাছাড়া পায়ে রক্ত জমাট বাঁধার কারণে পায়ে একটি অপারেশনও করা হয়। পরবর্তীতে পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে গ্রীনলাইট হাসপাতালের ডাক্তাররা বলেন রোগীর অবস্থা ভলো নয়। তার ফুসফুস ক্যান্সার। এরপর ক্যান্সার বিশেষজ্ঞকে দেখালে তিনি কোনো আশা দিলেন না। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী গত ২৯ জুন থেকে তাকে বর্তমানে রয়েল হাসপাতালের আইসিউতে রাখা হয়েছে। এরমধ্যে তার শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।

সুকণ্ঠ

সুকণ্ঠের স্ত্রী দীপান্বিতা দত্ত কান্নাজড়িত কণ্ঠে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন,‘ঢাকায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে চারদিনে খরচ হয় পাঁচ লক্ষ টাকা। এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে সাত লাখেরও বেশি। তার চিকিৎসা ব্যয় চালিয়ে যেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের।

তিনি আরো বলেন, আমি চাই আমার স্বামী সুস্থ হয়ে ছেলেমেয়ের কাছে ফিরে আসুক। আমার ছেলেমেয়ের মুখের দিকে তাকাতে পারি না। তারা বাবাকেই খুঁজে আর জিজ্ঞেস করে তাদের আব্বু বাসায় আসবে কবে?

দীপান্বিতা আরো বলেন, আমার যা সামর্থ্য ছিলো সবই আমি খরচ করেছি। এখন আমার ওই সামর্থ্য নেই। সবার সহযোগীতা পেলে ভারত নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করালে হয়তো সুস্থ্ হয়ে উঠবে সুকণ্ঠ।
ইতোমধ্যে আমার আত্নীয়-স্বজনদের কাছে সাহায্য চেয়েছি,পত্রিকাতে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে। তাছাড়া প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়েও সাহায্য চেয়েছি।তারা ব্যবস্থা করবে বলেছে কিন্তু এখনো করে উঠেনি।

দীপান্বিতা সবার কাছে আকুতি করে বলেন, আমার শ্বাশুড়ি একজন নামকরা শিল্পী এবং মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। একুশে পদক পেয়েছেন। একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অর্থের অভাবে দিনের পর দিন মৃত্যুর দিকে ঢলে পড়ছে। তাই সরকার এবং দেশের ধনাঢ্য সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষের কাছে আমার একটাই চাওয়া তারা যেনো একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে বাঁচিয়ে তোলে। আমার স্বামী যাতে অন্তত কয়েকটা বছর বেঁচে থাকে আমার ছেলে মেয়ের জন্য।

উল্লেখ্য, সুকণ্ঠ দত্ত ছোটন প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগের লাইব্রেরিতে অফিস সহকারী পদে চাকরি করতেন। তার এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলের নাম অরিন্দম দত্ত নীল (১০) এবং মেয়ের নাম অদ্বিতীয়া দত্ত শশী (৬)। দুজনই ফুলকি স্কুলে পড়ে। নন্দন কানন এক নম্বর গলির লোক নাদ্য পাল ভবনে স্থায়ীভাবে বসবাস করে এ পরিবার। তার পিতা গোপাল দত্ত গান লেখালেখি করতেন।

সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা- ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড (সুকান্ত দত্ত অ্যাণ্ড দ্বীপান্বিতা দত্ত) হিসাব নাম্বার- ১১২২০০০৭৪০৪৯৯ বিকাশ নাম্বার- ০১৭১৪৬২১৮৭৮

এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!