মেরিন সিটি মেডিক্যাল/ ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর ঘটনায় সিভিল সার্জনের তদন্ত কমিটি

মেরিন সিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় মারা যাওয়া উম্মে হাবীবার ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করে করা হয়েছে। ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শাখাওয়াত উল্লাহর নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। কমিটিকে ১০ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সিভিল সার্জন। রোববার (৩০ জুন) মৃত উম্মে হাবীবার স্বামী মুক্তার হোসেন সিভিল সার্জন বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে থেকে অভিযোগ পাওয়ার দুইদিন আগেই আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। এখন যেহেতু অভিযোগ পেয়েছি, সেটি তদন্ত দলকে দেওয়া হবে। সেইসাথে অভিযোগের ভিত্তিটা আরও জোরালো হল।

উল্লেখ্য, গত ৩১ মে মেরিন সিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে ভুক্তভোগী উম্মে হাবিবাকে নরমাল ডেলিভারের কথা বলে হঠাৎ সিজারিয়ান অপারেশনের কথা বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যদি কোনো সমস্যা হয় এ আশঙ্কায় পরিবারের লোকজন বিভাগীয় প্রধানকে সিজার করার অনুরোধ করেন। পরক্ষণে পরিবারের চাপে গাইনি বিভাগের প্রধান ডা. জাকিয়া সুলতানা বেগমকে জরুরি ফোন করা হলে তিনি হাসপাতালে এসে অপারেশন রুমে গিয়ে খুবই দ্রুততার সাথে মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে সিজার অপারেশন শেষ করেই তড়িঘড়ি চলে যান। তারপর থেকেই শুরু হয় রোগীর পেটব্যথা থেকে নানাবিধ সমস্যা। প্রথমে একে স্বাভাবিক ব্যাথা হিসেবেই ধারণা করে হাবিবার পরিবার।

কিন্তু এরপরও সমস্যার সমাধান না হলে স্বামী মুক্তার হোসেন তার পরিচিত সিএসসিআর হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. খন্দকার এ কে আজাদের কাছে নিয়ে গেলে ডা. আজাদ রোগীকে সিটি স্ক্যান করানোর পরামর্শ দেন। সিটি স্ক্যানে দেখা যায়, রোগীর পেটের ভেতর ডাক্তারি ভাষায় ‘মব’ নামে কিছু একটা রয়ে গেছে। ডাক্তার আজাদ সন্দেহ দূর করার জন্য বোর্ড মিটিং করে রোগীকে দ্বিতীয় দফায় আবার সিটি স্ক্যান করান। সিটি স্ক্যানের সর্বশেষ রিপোর্টে দেখা যায়, ‘পেটের ভেতর রক্তমাখা কাপড় (সার্জিক্যাল কটন) পঁচে পুঁজ জমে গেছে’! পরে সিএসসিআরে গঠিত বোর্ডসভায় ১৪ জুন জরুরি অপারেশন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উম্মে হাবীবাকে ঘটনার দিন (১৪ জুন) সিএসসিআরে ভর্তি করে অপারেশন করা হলে তিনি প্রায় চার ঘন্টা কোমায় (জীবন্মৃত) থাকেন। অবস্থার অবনতি দেখে রোগীকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে লাইফসাপোর্টে রাখা হয়। ওইদিনই শেষ রাতে মারা যান উম্মে হাবীবা।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!