আমার আত্মা তৃপ্ত! মরেও শান্তি পাব-মনে হচ্ছে আজ ১৬ ডিসেম্বর

রাজীব সেন প্রিন্স : বিশেষ প্রতিনিধি ::

 

চট্টগ্রামের বদর বাহিনীর প্রধান মীর কাসেম আলীর ফাঁসির রায় বহাল থাকার কথা শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন একাত্তরে তার হাতে নির্যাতিত জয় বাংলা বাহিনীর উপ-প্রধান মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর চৌধুরী।

1414939859

 

কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘এ মুহূর্তে মৃত্যু হলেও আমার আর কোনো আফসোস থাকবে না। মানবতাবিরোধী অপরাধে মীর কাসেম আলীর ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ খারিজ করে দিয়ে একাত্তরের এ গুপ্তঘাতক কুখ্যাত আলবদর বাহিনীর নেতা মীর কাসেম আলীর ফাঁসির সাজা বহাল থাকায় আমার আত্মা তৃপ্ত। আমি এখন মরেও শান্তি পাব।’

 

 

তিনি বলেন, ‘রায়ে আমি সন্তুষ্ট। আমাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে।’
তিনি জানান, ১৯৭১ সালের ২২ অথবা ২৩ নভেম্বর শহরের মাদারবাড়িতে কারফিউ ঘোষণা করে রেইড করে বদর বাহিনী। তাদের বাড়ি থেকে তাকে এবং ছোট ভাই প্রয়াত দস্তগীর চৌধুরীসহ (পরে বিএনপি নেতা) আরও কয়েকজনকে বেঁধে ডালিম হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়।

 

তিনি বলেন, যখন আমাকে টর্চার সেলে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তখন আমার মায়ের চোখের পানি ঝরছিল। আমি বলেছিলাম, আম্মা তুমি কেঁদো না, জয় বাংলা। আমার মা বলেছিল, আল্লাহর নাম নাও। আল্লাহ এর বিচার করবে। আমার মায়ের চোখের পানি বৃথা যায়নি। আজ মীর কাসেম আলীর ফাঁসির রায় হয়েছে।

 

 

১৬ ডিসেম্বর সকালে মুক্তিযোদ্ধারা গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে ডালিম হোটেলে গিয়ে জাহাঙ্গীরকে ছাড়িয়ে আনেন। চলতি বছরের ১৯ মার্চ ট্রাইব্যুনালে ১৬তম সাক্ষী হিসেবে মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে গিয়ে সাক্ষ্য দেন জাহাঙ্গীর চৌধুরী।
মোহাম্মদ সৈয়দ নামে এক মুক্তিযোদ্ধা ফোন করার পর জাহাঙ্গীর চৌধুরী উচ্ছ্বসিত হয়ে বলেন, তোমরা মিষ্টি বিতরণ কর, ৫০ কেজি, ১০০ কেজি যত লাগে মিষ্টি বিতরণ কর। টাকা যা লাগে আমি দেব। আজ আমার ঘরে ঈদের খুশি।

 

‘মনে হচ্ছে আজ ১৬ ডিসেম্বর’: মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মো. এমরানকে চট্টগ্রাম শহরের চান্দগাঁও এলাকা থেকে ধরে ডালিম হোটেলে রেখে নির্মম নির্যাতন করেছিল আলবদর বাহিনীর সদস্যরা। আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আলবদর বাহিনীর চট্টগ্রাম অঞ্চলের কমান্ডার মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা এমরান।
রায় ঘোষণার পর সৈয়দ মো. এমরান বলেন, আমাকে ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর ধরে নিয়ে গিয়েছিল। ১৬ ডিসেম্বর যেদিন দেশ স্বাধীন হয়, সেদিন আমি মুক্তি পাই। সেদিন যে আনন্দ হয়েছিল আজও আমার একই আনন্দ হচ্ছে। মনে হচ্ছে আজ ১৬ ডিসেম্বর।

 

রিপোর্ট : রাজীব সেন প্রিন্স

বিশেষ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম প্রতিদিন

এ এস / জি এম এম / আর এস পি :::

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!