৩৪ দিনের মধ্যে সবচেয়ে কম মৃত্যু, চট্টগ্রাম বিভাগেও ৪ জন

সর্বশেষ গত ১ জুন করোনায় একদিনে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছিল দেশে। পরদিনই ২ জুন একলাফে এ সংখ্যা ৩৭ জনে ওঠে। এরপর পুরো জুন মাসেই করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা নামেনি তিরিশের কোঠার নিচে। দু’দিন ছাড়া নিয়মিতভাবে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা তিরিশ বা চল্লিশের কোঠায় ছিল। মাঝখানেতো ১৬ জুন পার হয়ে গিয়েছিল পঞ্চাশের ঘরও। সেদিন দেশে মারা গিয়েছিলেন ৫৩ জন। অবশ্য ৩০ জুন এসে দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু ঘটে মহামারী করোনায়। সেদিন ৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

গত ৩ জুলাই করোনায় মারা যান ৪২ জন। তার আগের দিন ২ জুলাই ৩৮ জন, চলতি মাসের শুরুতে অর্থাৎ ১ জুলাই করোনায় প্রাণ হারান ৪১ জন। ৩৩ দিন পর গত ২৪ ঘণ্টায় প্রথমবারের মতো করোনায় মৃত্যু নামলো ৩০ এর নিচে। এদিন দেশে মারা যান ২৯ জন। একই চিত্র চট্টগ্রামেও। জেলায় এদিন কোন মৃত্যু না হলেও বিভাগজুড়ে মারা গেছেন মাত্র ৪ জন, অন্যান্যদিন এই সংখ্যা থাকে ১০ এর উপরে।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে ২৯ জনের মৃত্যু নিয়ে ভাইরাসটির সংক্রমণে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল এক হাজার ৯৯৭ জনে। এছাড়া একই সময়ে নতুন করে তিন হাজার ২৮৮ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে সর্বমোট এক লাখ ৫৯ হাজার ৬৭৯ জন ভাইরাসটিতে সংক্রমিত শনাক্ত হলেন।

করোনায় এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে। সেখানে ১০৪১ জনের মৃত্যু হয়। এরপরেই রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ। চট্টগ্রামে মৃত্যু হয় ৫২১ জনের। এছাড়া রাজশাহীতে ১০১ জন, সিলেটে ৮৪ জন, খুলনায় ৮২ জন, বরিশালে ৬৭ জন, রংপুরে ৫৩ জন এবং সবচেয়ে কম মৃত্যু হয়েছে ময়মনসিংহে ৪৮ জন।

শনিবার (৪ জুলাই) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন হেলথ বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।

গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন তাদের বিশ্লেষণ তুলে ধরে ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, মৃতদের মধ্যে ঢাকা বিভাগেরই বাসিন্দা রয়েছেন নয়জন, রাজশাহীতে সাতজন, চট্টগ্রামে চারজন, খুলনা ও সিলেটে তিনজন করে, বরিশাল বিভাগে দুজন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে একজন মৃত্যুবরণ করেছেন। এদের মধ্যে হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ২৫ জন, বাড়িতে থেকে একজন এবং হাসপাতালে মৃত অবস্থায় এসেছেন তিনজন।

মৃত ২৯ জনের মধ্যে ২১ পুরুষ এবং আটজন নারী। তাদের বয়স বিশ্লেষণে জানানো হয়, মারা যাওয়াদের মধ্যে ১১ থেকে ২০ বছরের একজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের একজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের চারজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে নয়জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১১ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের একজন এবং ৮১ থেকে ৯০ বছরের বয়সসীমার দুজন রয়েছেন।

দেশের ৭১টি আরটি-পিসিআর ল্যাবের মধ্যে ৬৪টির পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস শনাক্তে ১৩ হাজার ৮৭১টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে পরীক্ষা করা হয়েছে ১৪ হাজার ৭২৭টি নমুনা। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়াল ৮ লাখ ৩২ হাজার ৭৪টিতে। দেশে নতুন করে আরো দুই হাজার ৬৭৩ জন করোনারোগী সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৭০ হাজার ৭২১ জন।

অন্যদিকে, সিভিল সার্জনের দেয়া তথ্যমতে চট্টগ্রাম জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুনভাবে ২৬৩ জন শনাক্ত হলেও মৃত্যু হয়নি কারও। উল্টো করোনাজয় করেছেন ২৫ জন। তাতে করে চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৯৬৬৮ জন, যাদের মধ্যে ৬৬৬৩ জন নগরের ও ৩০০৫ জন উপজেলার বাসিন্দা। এ পর্যন্ত করোনা মুক্ত হয়েছেন ১১৫৬ জন এবং মোট মৃত্যু আগেরদিনের ১৮৭-তেই স্থির আছে। এর মধ্যে ১৩৬ জন নগরের ও ৫১ জন উপজেলার বাসিন্দা।

এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!