কক্সবাজারের পর্যটন ব্যবসা লাটে, কষ্টে আছে ৩০ হাজার মালিক-কর্মচারী

করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘ সাড়ে ৩ মাস ধরে বন্ধ কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পনির্ভর সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত শহরের হোটেল-মোটেল, গেস্টহাউস, কটেজ, রেস্টুরেন্টসহ প্রায় ৫৪০টি প্রতিষ্ঠানের মালিকসহ ৩০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্দিন যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বেকার হয়ে পড়েছে প্রায় ২০ হাজার কর্মকর্তা ও কর্মচারী।

লকডাউনের সাড়ে তিন মাসেও পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় কক্সবাজারের পর্যটন কেন্দ্র এবং পর্যটন শিল্পনির্ভর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এখনই খুলে দেওয়ার কোন পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন।

এদিকে, ক্যাটাগরি অনুযায়ী হোটেল-মোটেলসহ পর্যটন শিল্প নির্ভর ব্যবসায়ীদের সুদমুক্ত ঋণ দেওয়া ও বেকার হওয়া কর্মচারীদের রেশনভুক্ত করার জন্য জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে আবেদন জানিয়েছেন ফেডারেশন অব ট্যুরিজম ওনার্স এসোসিয়েশন বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা শাখা।

করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর চলতি বছরের ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয় কক্সবাজারের সকল হোটেল-মোটেল, গেস্টহাউস, কটেজ, রেস্টুরেন্টসহ পর্যটন কেন্দ্র। সেই থেকে দীর্ঘ সাড়ে ৩ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে পর্যটন শিল্পনির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ফলে পর্যটন ব্যবসায়ীদের এখন চরম দুর্দিন চলছে। শেষ সম্বল বিক্রি করে এ ব্যবসায় নামা প্রায় ২ হাজার ব্যবসায়ীর এখন পথে বসার উপক্রম। কক্সবাজারের পর্যটন ব্যবসায় বলতে গেলে ধস নেমেছে। দেশের অর্থনীতিতে পর্যটন ব্যবসায়ীদের যোগান উল্লেখযোগ্য হলেও তাদের কঠিন সময়ে কোন ধরনের সরকারি প্রণোদনা কিংবা সহায়তা এখনও পর্যন্ত জোটেনি।

ফেডারেশন অব ট্যুরিজম ওনার্স এসোসিয়েশন বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা শাখা সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার শহরে সাড়ে ৪ শতাধিক আবাসিক হোটেল, ১৪০টিরও বেশি রেস্টুরেন্ট, ২ শতাধিক ট্যুর অপারেটর অফিসসহ পর্যটন শিল্পনির্ভর প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রথমদিকে পকেটে থাকা পুঁজি দিয়ে কোনমতে মার্চ পর্যন্ত দিনাতিপাত করলেও বর্তমানে অনেকটা অর্ধাহারে অনাহারে রয়েছে এখানকার কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। অনেকে কোন কাজ না পেয়ে চরম হতাশায় দিনযাপন করছেন।

ফেডারেশন অব ট্যুরিজম ওনার্স এসোসিয়েশন বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, ইতোমধ্যে পর্যটন শিল্পনির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত ২০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী বেকার হয়ে গেছে। পাশাপাশি ১০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কোন রকমে বেতন দিয়ে রাখা হয়েছে।

বর্তমানে তাদের চরম দুর্দিন চলছে— উল্লেখ করে আবুল কাশেম সিকদার জানান, হোটেল-মোটেলসহ পর্যটন শিল্পনির্ভর ব্যবসায়ীদের সুদমুক্ত ঋণ দেওয়া ও বেকার হওয়া কর্মচারীদের রেশনভুক্ত করার জন্য জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ৪-৫ দিন আগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবরে আবেদন জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, এখন পর্যন্ত পর্যটন কেন্দ্র ও পর্যটন শিল্পনির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়ার কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

এখানকার ব্যবসায়ীদের জন্য কোনও প্রণোদনা পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক জানান, হোটেল-মোটেল মালিকদের জন্য সরকারি কোনও বরাদ্দ পাওয়া গেলে তাদের সাথে বৈঠক করে তা বিতরণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসএ/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!