হাতে গোনা রাজাকার, আল বদর, আল শামস ছাড়া আপামর মানুষ মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন

হাতে গোনা রাজাকার, আল বদর, আল শামস ছাড়া আপামর মানুষ মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন 1নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধ ছিল জনযুদ্ধ। হাতে গোনা রাজাকার, আল বদর, আল শামস ছাড়া এদেশের আপামর মানুষ মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন।

সোমবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক মিলনায়তনে শহীদ স্বপন কুমার চৌধুরী স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, ইতিহাস বিকৃতকারীরা আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়। স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে যারা ষড়যন্ত্র করেছে, ঘোষক সাজিয়েছে সেটা ইতিহাস গ্রহণ করেনি। মাঝে মাঝে আমরা শঙ্কিত হই, ইতিহাস মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র দেখে। কিন্তু ইতিহাস আপন গতিতে চলে। খলনায়করা ঘৃণার পাত্রে পরিণত হয়।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বার বার একটি জাতির ইতিহাসে আসে না। যারা যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন, ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের গর্ব হওয়াটা স্বাভাবিক। রাজাকারদের আস্ফালনে মুক্তিযোদ্ধারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন, প্রতিবাদ প্রতিরোধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। একে একে চলে যাচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধারা। কিন্তু তাদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস থেকে যাচ্ছে।

মুক্তিযুদ্ধের গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, স্বপনদার সঙ্গে পরিচয় ঢাকায়। তিনি আমাদের আপ্যায়ন করাতেন। ভারতে স্বপনদার বিচরণ ছিল। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রস্তাবক। নগরীর শহীদ মিনার সংলগ্ন পার্কটি শহীদ স্বপন পার্ক নামকরণের প্রস্তাব করছি।

জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. শাহাবউদ্দিন বলেন, স্বপন চৌধুরী মেধাবী ছাত্রনেতা ছিলেন। তিনি কোনো কর্মীকে তুমি বলতেন না, আপনি বলতেন। নারীদের সম্মান করতেন। তিনি বেঁচে থাকলে সাতকানিয়া রাজাকারের ঘাঁটি হতো না।

তিনি বলেন, অনেক মুক্তিযোদ্ধা কোটি টাকার মালিক। বড় পদে আছেন। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধারা গরিব, দুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে দাঁড়ান না। যুদ্ধ শেষ মুক্তিযোদ্ধাদের দায়িত্ব শেষ নয়, বরং দায়িত্ব আরও বেশি।

চমেকের হৃদরোগ বিভাগের প্রধান ডা. প্রদীপ চৌধুরী বলেন, পাকিস্তান থাকলে আমার মতো লোক ডাক্তার হতে পারত না। স্বপন চৌধুরীদের রক্তে আমরা দেশ পেয়েছি, ডাক্তার হতে পেরেছি। স্বপন চৌধুরীর গ্রাম জামায়াত-শিবির অধ্যুষিত হতে পারে না।

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেনসেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সভাপতি নুরুল আলম মন্টু, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহমদ, মুক্তিযোদ্ধা আবু ইউসুফ, স্বপন কুমার চৌধুরীর পরিবারের পক্ষে ইন্দু নন্দন দত্ত, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ প্রমুখ।

আবু সুফিয়ান বলেন, ৪৬ বছর পর আমরা এ স্মরণসভা করছি, যা গুরুত্বপূর্ণ। স্বপন চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর কাছের মানুষ ছিলেন। সত্যিকারের মেধাবী নেতা ছিলেন।

বক্তারা স্বপন চৌধুরীর স্মৃতি সংরক্ষণে সড়কের নামকরণের দাবি জানান।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!