‘স্পট হাতবদল’ কক্সবাজার সুগন্ধা পয়েন্টে বেপরোয়া দখল বাণিজ্য

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টের উত্তর পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হলেও দক্ষিণ পাশে স্থাপনা নির্মাণ অব্যাহত রয়েছে। দখলদার চক্র ওই এলাকায় সরকারি জমিতে দোকান নির্মাণ করে লাখ টাকায় বেচাকেনা করছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।

জানা গেছে, গত ১৭ অক্টোবর জেলা প্রশাসন ও কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের যৌথ উদ্যোগে সুগন্ধা পয়েন্টে উত্তর পাশে ৫২টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হলেও আরও অনেক অবৈধ স্থাপনা অক্ষত রয়ে গেছে। এই উচ্ছেদ অভিযানের ২২ দিনের ব্যবধানে ফের সরকারি জমিতে নির্মিত হয়েছে ২০টির মতো দোকান। অবৈধভাবে নির্মিত এসব দোকান
লাখ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে। আর এসব স্থাপনা নির্মাণে জড়িত রয়েছে সম্প্রতি উচ্ছেদ অভিযানে পুলিশের উপর হামলা মামলার আসামিরাও। প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযানকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সংঘবদ্ধ চক্রের এমন দখলবাজিতে সচেতন মহলের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, সুগন্ধা পয়েন্টের উত্তরে উচ্ছেদ অভিযানের সময় সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের উপর হামলা মামলার আসামি বাহারছড়ার জয়নাল, মফিজ উল্লাহ, মো. আলমগীর আবারও অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের সঙ্গে রয়েছে বাহারছড়া ও কলাতলী এলাকার আবুল কালাম, জানে আলম খাইর, মোবারক, হেলাল, বাবু, মিটন নামে আরও বেশ কয়েকজন।

এ বিষয়ে সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের উপর হামলা মামলার আসামি মো. আলমগীর বলেন, আমি সরকারি জায়গা দখল করছি না। জানে আলম খাইরের দখল করা দোকানটি ১ লাখ টাকায় কেনার কথাবার্তা চলছে। তবে নিবো কিনা এখনও কনফার্ম না।

তিনি বলেন, আমি মামলার আসামি হলে আমাকে আটকের জন্য পুলিশ তো একবারও আসেনি। তাছাড়া একটি সিন্ডিকেট সরকারি জায়গায় দোকান ঘর তৈরি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও সেদিকে নজর নেই প্রশাসনের। ফলে নিরাপদে প্রতিনিয়ত অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে চক্রটি।

সরেজমিনে গিয়ে এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ৭ নভেম্বর জয়নাল, জানে আলম ও খাইর নামে তিনজন রাতের আধারে অবৈধ দোকান নির্মাণ করে এক লাখ টাকায় দখল বিক্রি করেন আচার ব্যবসায়ী মো. আলমগীরের কাছে। এসব অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ বা দখল বেচাকেনার র্নিদিষ্ট একটি টাকা দিতে হয় উচ্ছেদ হওয়া অবৈধ মার্কেটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মফিজ উল্লাকে। তবে এ বিষয়ে জানতে মফিজ উল্লাকে ফোন করা হলে মোবাইল বন্ধ পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয় নি।

প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ৩ বছর আগে ড্রাগন মার্কেটের পাশের সরকারি প্লটটি উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে কাঁটাতাঁরের বেড়া ও নারিকেল চারা রোপন করেছিলেন প্রশাসন। ৩ বছরের ব্যবধানে সরকারি খরচে নির্মিত কাঁটাতারের বেড়া ও নারিকেল চারা উধাও হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহরিয়ার মুক্তার বলেন, উচ্ছেদ অভিযান করেছি মাস হয়নি। রাতের আধারে সরকারি জমি দখল করে কেউ রাখতে পারবে না।

কক্সবাজার পর্যটন সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ছৈয়দ মুরাদ ইসলাম বলেন, শীঘ্রই এসব অবৈধ দোকান নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সমুদ্র সৈকত এলাকায় কেউ জবর দখল বা অনিয়ম করতে পারবে না।

এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!