সুস্থতা পেল সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে শহরে আনা সাজেকের ৫ শিশু

সাজেকে ছড়িয়ে পড়া হামের প্রকোপে গুরুতর অসুস্থ ৫ শিশুকে হেলিকপ্টারে চমেক হাসপাতালে এনে নিবিড় তত্ত্বাবধানে রাখার পর ৫ ত্রিপুরা শিশু সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চট্টগ্রাম সেনানিবাসস্থ ২৪ পদাতিক ডিভিশনের সর্বাত্মক সহযোগিতায় ১৮ দিনের চিকিৎসা প্রক্রিয়ার পর শনিবার (১১ এপ্রিল) সকাল ১১টায় ৫ জন হাম ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ত্রিপুরা শিশুরা ফিরে গেল বাবা মায়ের কোলে।

তারা হলো প্রতিল ত্রিপুরা (০৫), রোকেন্দ্র ত্রিপুরা (০৬), রোকেদ্র ত্রিপুরা (০৮), নহেন্দ্র ত্রিপুরা (১০) এবং দীপায়ন ত্রিপুরা (১৩)। সবাই একই পরিবারের সদস্য।

আক্রান্তদের পরিবার জানায়, এ শিশুদের চিকিৎসায় সময়ে সরকারি বরাদ্দ ছাড়াও বিভিন্ন আনুষঙ্গিক খরচ সদর দপ্তর ২৪ পদাতিক ডিভিশন বহন করে।

এ ব্যাপারে জিওসি মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান বলেন, ‘আমরা সব সময় পাহাড়িদের পাশে ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব। এর আগেও আমরা এরকম কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। এ ব্যাপারে কোন প্রকার কার্পণ্য করা হবে না।’

আক্রান্ত শিশুদের পিতা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘সেনাবাহিনী সাহায্যের হাত বাড়িয়ে না দিলে আমাদের পক্ষে শিশুদের জীবন বাঁচানো সম্ভব হতো না। আমরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এই অবদান সারা জীবন মনে রাখবো।’

উল্লেখ্য, বিগত দুই মাস যাবত রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের বিভিন্ন পাহাড়ি গ্রামে এক অজানা রোগ দেখা যায়। প্রাথমিকভাবে রোগের কারণ উদঘাটন করতে ব্যর্থ হয় স্থানীয়রা। পরবর্তীতে, কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা যায় হাম ও নিউমোনিয়ার লক্ষণ। কিন্তু ততদিনে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারায় ৮ শিশু।

সংবাদ পেয়ে গত ২৪ মার্চ সেনাবাহিনীর চিকিৎসক দল এবং বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ২ ডাক্তারসহ সর্বমোট ০৮ সদস্যের এক বিশেষ চিকিৎসক দল হেলিকপ্টারযোগে উক্ত এলাকায় যান। তাদের লক্ষ্য ছিল দুদিনে শতাধিক রোগীর চিকিৎসা করা। আক্রান্তদের মধ্যে শিয়ালদহ পাড়ার ৫ শিশুর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এ সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ হেলিকপ্টারযোগে তাদেরকে প্রথমে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে এবং পরবর্তীতে সেখান থেকে তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর শনিবার (১১ এপ্রিল) তারা সুস্থ হয়।
এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!