সাতকানিয়ায় বেধড়ক পিটিয়ে যুবক খুন, মামলাই হয়নি থানায়

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ঘর থেকে ডেকে নিয়ে যুবককে বেধড়ক পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

নিহত যুবকের নাম মো. শাহাবুদ্দিন (৩৫)। তিনি উপজেলার মাদার্শা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড সাঁচি বেপারীপাড়ার নুর আহমদের ছেলে।

শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে থানা পুলিশ সাতকানিয়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড বণিক পাড়ার পূর্ব পাশে সুবেদার পুকুরপাড় এলাকা থেকে ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করে।

তবে শাহাবুদ্দিনের স্ত্রী ফারজানা বেগমের (২৪) অভিযোগ, দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার পা কাটা শহীদ ও মিনহাজের নেতৃত্বে তার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে।

নিহতের স্ত্রী বলেন, শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে পা কাটা শহীদ ও মিনহাজের নেতৃত্বে কয়েকজন আমার স্বামীকে ঘর থেকে ডেকে অটোরিকশা করে নিয়ে যায়। তখন আমি স্বামীকে বললাম, তারা খারাপ লোক, তাদের সঙ্গে যাবেন না। তিনি আমার কথা শুনেননি। কয়েক ঘণ্টা পর স্বামীকে ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। বিকালে একবার ফোন রিসিভ করলেও তিনি কথা বলেননি। সারা রাত ঘরেও আসেননি । সকালে শুনছি সাতকানিয়া পৌরসভার রামপুর বনিকপাড়ায় স্বামীর লাশ পাওয়া গেছে।

তিনি আরও বলেন, আমি নিশ্চিত আমার স্বামীকে শহীদ ও মিনহাজরা বেধড়ক পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমি স্বামী হত্যার বিচার চাই।

নিহত শাহাবুদ্দিনের বাবা নুর আহমদ বলেন, বিগত প্রায় ৫ বছর আগে আমার ছেলে বিদেশ থেকে দেশে আসে। কয়েক বছরের মধ্যে সে মাদকসেবনে জড়িয়ে পড়ে। তিন দিন আগে পারিবারিক বৈঠকে তাকে আবারও বিদেশ পাঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে আমার ছেলেটা খুন হলো। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক বিচার চাই।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী এওচিয়ার বাসিন্দা আবুল হাশেম (৪২) বলেন, দেওদীঘি তহশিলদার অফিসের পাশের বিলে শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে আমি আলু ক্ষেত দেখতে যায়। সেখানে দেখি অফিসের পূর্ব পাশে বিলে গাছ বাগানে এক লোককে কেউ মারধর করছে। কাছে গিয়ে দেখি, শহীদ ও মিনহাজের নেতৃত্বে সাতজন শাহাবুদ্দিনকে শক্ত গাছের বাটাম দিয়ে বেধড়ক পেটাচ্ছে। পরে তারা আমাকেও দড়ি দিয়ে বেঁধে মারতে থাকে। এক বন্ধুর সহায়তায় পরে আমি ছাড়া পাই।

মাদার্শা ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আহমদ মিয়া বলেন, শাহাবুদ্দিন মাদকাসক্ত। সেই সূত্রে মাদক বিক্রেতা পা কাটা শিবির ক্যাডার শহীদ এবং মিনহাজের সঙ্গে শাহাবুদ্দিনের সম্পর্ক রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শহীদ ও মিনহাজের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল দিলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে নিহত যুবক শাহাবুদ্দিন মাদকাসক্ত ছিল। যেকোনো দ্বন্দ্বের জেরে সে বেধড়ক পিটুনিতে নিহত হতে পারে। এ বিষয়ে আমরা তদন্ত করছি। গত শনিবার সকালে ঘটনাস্থল থেকে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

নিহতের পরিবার মামলা করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান ওসি।

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!