সবাই সচেতন হলে ভোক্তা অধিকার বিরোধী অপরাধ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব

চট্টগ্রামে ভোক্তা অধিকার দিবস পালিত

সুরক্ষিত ভোক্তা-অধিকারের অঙ্গিকার নিয়ে চট্টগ্রাম নগরে পালিত হয়েছে ভোক্তা অধিকার দিবস। দিবসটির প্রতিপাদ্য এবং ভোক্তা অধিকারের গুরুত্বের উপর আলোকপাত করে রোববার (১৫ মার্চ) সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে মুখ্য আলোচক ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডীন প্রফেসর এবিএম আবু নোমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল এডভোকেট আবুল হাশেম, সিএমপির সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুর রউফ, কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন, আনসার ও ভিডিপি চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক ও অধিনায়ক এএসএম আজিম উদ্দিন, বিএসটিআই’র পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার সেলিম রেজা, চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ প্রমুখ।

এতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপপরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

সভাপতির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, সমাজে ভোক্তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে সবার আগে প্রয়োজন সাধারণ ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের সচেতনতা। সবাই সচেতন হলে খাদ্যে ভেজাল, ভোক্তা অধিকার বিরোধী অপরাধ দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হটলাইন ও অভিযোগের নম্বরগুলো দ্রুত জনগনের মাঝে প্রচার করতে হবে।

মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুষদের ডীন প্রফেসর এবিএম আবু নোমান বলেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ একটি যুগোপযোগী আইন। এ আইনের প্রতারিত ভোক্তা অধিদপ্তরে অভিযোগ করতে পারেন এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে আদায় হওয়া জরিমানার ২৫ শতাংশ অভিযোগকারীকে প্রদান করা হয়। তবে তা অভিযোগকারীর ক্ষতিপূরণ নয়, বরং প্রণোদনা হিসেবে প্রদান করা হয়। অভিযোগকারী চাইলে ফৌজদারি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের পরেও তার আর্থিক ক্ষতির ৫ গুণ ক্ষতিপূরণ দাবি করে দেওয়ানী প্রতিকার চাইতে পারেন।

ক্যাবের কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন তাঁর বক্তব্যে বলেন, ভোক্তা অধিকার বলতে একজন মানুষের জীবন ও জীবিকার সাথে জড়িত সবগুলো মৌলিক অধিকার- খাদ্য, ভোগ্য পণ্য, সেবা, সবই বোঝাই। শিক্ষা সেবা, চিকিৎসা, গণপরিহন, বাক-স্বাধীনতা থেকে শুরু করে চাকরির নিরাপত্তা ইত্যাদিও ভোক্তা অধিকারের আওতাভুক্ত করা প্রয়োজন। কিন্তু সরকার ভোক্তাদের অধিকার সুরক্ষার জন্য যাদের উপর দায়িত্ব ন্যস্ত করেছেন তাদের সক্ষমতা সীমিত। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন একটি অধিদপ্তর হিসেবে সেভাবে গুরুত্ব না পাবার কারণে বারবার উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে। সে কারণে মুজিববর্ষের অঙ্গীকার সুরক্ষিত ভোক্তা অধিকারকে সত্যিকারে রূপান্তর করতে হলে ভোক্তা অধিকার বিষয়ক পৃথক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা ছাড়া বিকল্প নাই।

উপপরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ বলেন, এই অধিদপ্তর ভোক্তার নিকট হতে অভিযোগ গ্রহণের জন্য ১৬১২১ নম্বর চালু করেছে। এ ছাড়াও ৩৩৩ নম্বরে কল করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ করা যায়।

তিনি আরও বলেন, তাঁর দপ্তর আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও সততার সাথে কাজ করে যাচ্ছে। ভোক্তা অধিকার বিষয়ক প্রচারণা চলছে, ভোক্তাগণের নিকট হতে প্রাপ্ত অভিযোগ আন্তরিকতার সাথে নিষ্পত্তি করা হচ্ছে এবং নিয়মিত বাজার তদারকি কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

সভায় ব্যবসায়ী নেতা, সুধীসমাজ, ক্যাব নেতৃবৃন্দ এবং প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত থেকে আলোচনায় অংশ নেন।

এএস/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!